Friday , 20 September 2024

বন্যার আসল কারণ কী?

ভারতের ত্রিপুরার গোমতী নদীর উপর ডম্বুর ড্যাম ৩১ বছর পর ভারী বর্ষণের কারণে খুলে দেওয়া হয়েছে। অনেকেই ধারণা করছেন যে, এই ড্যাম খোলার কারণেই বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ বন্যার প্রকৃত কারণ বুঝতে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড দুইজন জলবায়ু এবং পানি সম্পদ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছে।

ছবি: সংগৃহীত।

বাংলাদেশে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার মাত্র দুই মাস পরেই, আবার দেশের দক্ষিণাঞ্চল নতুন করে বন্যার সম্মুখীন হয়েছে। গত বুধবার ২১ আগস্ট ২০২৪ মধ্যরাত থেকে হঠাৎ করেই এ বন্যার পানি আসতে শুরু করে। ফেনী, নোয়াখালী এবং কুমিল্লায় বন্যার পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি ঘটেছে।

ভারতের ত্রিপুরার গোমতী নদীর উপর ডম্বুর ড্যাম ৩১ বছর পর ভারী বর্ষণের কারণে খুলে দেওয়া হয়েছে। অনেকেই ধারণা করছেন যে, এই ড্যাম খোলার কারণেই বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ বন্যার প্রকৃত কারণ বুঝতে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড দুইজন জলবায়ু এবং পানি সম্পদ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছে।

“বৃষ্টির ব্যাপারে জানতো আবহাওয়া অধিদপ্তর, কিন্তু তারা সতর্ক করেনি”
ড. আইনুন নাহার নিশাত
ইমেরিটাস অধ্যাপক, সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়

ড. আইনুন নাহার নিশাত। ছবি: স্কেচ টিবিএস।

প্রথমত, স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে ড্যাম এবং পানিরোধী বেষ্টনীগুলো নিয়ে ভুল ধারণা ছড়িয়ে পড়েছে এবং এগুলো বিভ্রান্তি তৈরি করছে। ড্যামকে ‘বাঁধ’ বলা ঠিক নয়। জলাধার হিসেবে ব্যবহারের জন্য মূলত নদীর ওপর এসব ড্যাম তৈরি করা হয়। অপর দিকে বাঁধ হলো পানিরোধী বেষ্টনী, যা পানি উপচে পড়া থেকে রক্ষা করে।

ভারতে গোমতী নদীর উপর একটি ড্যাম রয়েছে এবং চট্টগ্রামের কাপ্তাইতেও একটি ড্যাম রয়েছে। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার সাথে সাথেই এ ড্যামগুলো পূর্ণ করা হয়, কারণ যত বেশি পানি সংরক্ষণ করা যাবে, তত বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে। তবে বর্ষার শেষ দিকে যদি বৃষ্টি হয়, তখন ড্যামগুলো আর পানি ধরে রাখতে পারে না।

এই ড্যামগুলো জলবিদ্যুৎ উৎপাদন এবং বন্যা প্রতিরোধের জন্যও ব্যবহৃত হয়। এ কারণেই ত্রিপুরা এবং কুমিল্লার নিম্নাঞ্চলে দীর্ঘদিন বন্যা হয়নি। যার কারণে দীর্ঘ ৩০ বছরে কুমিল্লায় কোনো বন্যা হয়নি।

দ্বিতীয়ত, গোমতী নদীর অববাহিকায় ড্যামটি অবস্থিত। এর অর্থ হলো এ ড্যামের কারণে ফেনী, নোয়াখালী কিংবা চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলে বন্যা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কিন্তু গতকালের পত্রিকা থেকে আমি জেনেছি, এসব এলাকায় ও ত্রিপুরায় ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আর এ অতি বৃষ্টির কারণ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া একটি নিম্নচাপ। তবে এটি একটি স্বাভাবিক ঘটনা।

এছাড়া, দিল্লিতেও প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। যদিও এর সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তবে আমি এই প্রসঙ্গটি তুলেছি কারণ ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি) সেখানে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় কমলা সতর্কতা জারি করেছে এবং ত্রিপুরায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে।

এসব তথ্য বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরও পেয়েছে। তারা তাদের রাডারের মাধ্যমে বৃষ্টির বিষয়টি জানতে পেরেছে। কিন্তু আমাদের কোনো সতর্কবার্তা দেওয়া হয়নি। যদি একদিন আগেও আমাদের সতর্ক করা হতো, তাহলে আমরা নিজেদের প্রস্তুত করতে পারতাম।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আধুনিকায়ন প্রয়োজন। আমরা গত ৫০ বছর ধরে একই কথা বলে আসছি।

গত ৩০ বছরে গোমতী অববাহিকায় তেমন বন্যা হয়নি। মানুষ সেখানে বন্যা নিয়ন্ত্রণকারী বেষ্টনীর কথা ভুলে গেছে এবং এত বেশি পানি আসার কারণে যদি সেখানে কোনো ফাটল তৈরি হয় তাহলে আমি অবাক হবো না।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুণ

 

Spread the love

Check Also

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধ ঘোষণা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধ রাখার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *