Thursday , 19 September 2024

রাতের সৌন্দর্য চর্চা জেনে নিন এক নজরে

রাতের সৌন্দর্য চর্চা নিয়ে  “রূপ বিশেষজ্ঞদের” মতে রাতের রূপচর্চা খুবই কার্যকর। ব্যস্ত এই সময়ে নিজের যত্ন কতটুকুই বা নেয়া যায়। গৃহিণীদের ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায় সেই সাতসকালেই।রাতের চর্চার সময় ই বা কই। আর কর্মজীবী নারীদের তো সারাদিন কাজ করে বাসায় ফিরেও শেষ নেই কাজ; সংসার দেখাশোনার সঙ্গে সঙ্গে পরের দিনের কাজের প্রস্তুতি নিতে নিতেই ঘুমের সময় হয়ে যায়।

রাতের
রাতের সৌন্দর্য চর্চা জেনে নিন এক নজরে

শিক্ষার্থীরা আরও ব্যস্ত, সারা দিনে নিজের দিকে একটু তাকানোর সুযোগটা কোথায়! প্রতিদিনের নিয়মিত পরিচর্যার কোটা তাই খালিই পড়ে থাকে। ফলাফল ত্বক-চুলের নানাবিধ সমস্যা, মুটিয়ে যাওয়া, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া, আরও কত কিছু। এই যখন অবস্থা, তখন এর আদর্শ সমাধান হতে পারে ঠিক ঘুমাতে যাওয়ার আগের সময়টুকুতে রূপচর্চার কাজটুকু সেরে ফেলা।
রাতের রূপচর্চা কেন জরুরি-

যারা সারাদিন বাইরে কাজ করেন, তাদের ত্বকে ধুলো ধোঁয়া ইত্যাদি জমা হয়।

সন্ধ্যা বা রাতে বাড়ি ফেরার পর সারাদিনের জমে থাকা ময়লা এবং ব্যবহৃত মেকআপ ভালো করে ত্বক থেকে উঠিয়ে দেয়া জরুরী। মূলত এই কারণেই রাতে রূপচর্চার প্রয়োজন। অস্বাভাবিক পরিবেশ দূষণে মুখে যা ধুলাবালি জমা হয় এগুলো ত্বকে জমিয়ে রেখে দিলে ত্বকের করুন অবস্থার কথা আশা করি বলার অপেক্ষা রাখে না। ময়লা তুলে না ফেললে ত্বকের ছিদ্রগুলো বন্ধ হয়ে যাবে, ত্বক স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারবে না তার ফলে ব্রণ, ব্ল্যাককহেডস, হোয়াইট হেডস বা ত্বকের আরও অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।

রোদ তো বটেই দিনের আলোও ত্বকের জন্য অনেক সময় ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়। রাতে সে সম্ভাবনা নেই, কাজেই তখন কিছু লাগালে পরিষ্কার ত্বকের উপর তা আরও ভালোভাবে কাজ করতে পারে। ঘুমন্ত অবস্থায় মেটাবলিজমও কম হয়, ত্বক থাকে অনেক আরামে। তাছাড়া ৭-৮ ঘণ্টা টানা ঘুমানোর কারণে ক্রিম কার্যকর হবার মতো সময় পায়। যেটা দিনের বেলা হাজার কাজকর্ম হইচই; খাওয়াদাওয়ার মাঝে অসম্ভব।

কাজেই ত্বকের পুষ্টি ও সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য প্রসাধন ও পরিচ্ছন্নতা রাতে করাই যুক্তিযুক্ত। তবে দিনের কাজের মাঝে সময় করে নিয়ে দুই একবার যদি মুখ পরিষ্কার করে নেওয়া যায়। তাহলে রাত্রের রূপচর্চা আরও কার্যকর হবে, এ সম্পর্কে সন্দেহ নেই।
রাতের রূপচর্চা কেমন হওয়া উচিত?

রুটিন অনেক কিছুর ওপর নির্ভরশীল। যেমন-বয়স, ঋতু, আবহাওয়া, বাতাসের আর্দ্রতা ইত্যাদি।

ত্বকঃ সুন্দর ত্বকের মূলমন্ত্রই হলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। ‘ত্বকের ময়লা ঠিকমত পরিষ্কার করা না হলে ব্রণ হতে পারে। ত্বক হয়ে পড়ে খসখসে, রুক্ষ, অমসৃণ। তাই রাতে ঘুমানোর আগে মুখটাকে পরিষ্কার করে ঘুমালে সারা রাতের লম্বা সময় ত্বক একেবারে তরতাজা। আমাদের গরমের দেশে অতিরিক্ত ঘাম হওয়ায় ত্বক তেলতেলে ও আর্দ্র হয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে মৃদু সাবান ও পানি দিয়ে মুখ ধোয়া খুব ভালো। অবশ্য শুষ্ক ত্বকে সাবানের বদলে ক্লিঞ্জিং লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে। পরিষ্কার করার জন্য ব্যবহার করা উচিত ভিজে তুলো।

ধাপ-১

প্রথমে মুখ ধুয়ে নিন আপনার ত্বকের সঙ্গে খাপ খায় এমন কোনো ফেসওয়াশ দিয়ে। স্পর্শকাতর ত্বক হলে ব্যবহার করতে পারেন ভেষজ ফেসওয়াশ।

ধাপ-২

এরপর ব্যবহার করুন ফেসপ্যাক। ঘরেই তা বানাতে পারেন। শুষ্ক ত্বকের জন্য ১ টেবিল চামচ উপটান+১ চা চামচ টকদই+১ চা চামচ দুধের সর বা দুধ।

তৈলাক্ত ও মিশ্র ত্বকের জন্যঃ ১ টেবিল চামচ উপটান+১ চা চামচ টকদই+১ চা চামচ লেবুর রস।

এগুলো একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। পুরোটা শুকাবেন না, অর্ধেক শুকিয়ে এলে মুখ হালকা ঘষে ধুয়ে ফেলুন। প্যাকে মেশাতে পারেন গোলাপজল, যা সব ধরনের ত্বকের জন্য ভালো।

ধাপ-৩

ময়েশ্চারাইজার হিসেবে শুষ্ক ত্বকের অধিকারীরা ভেজা মুখে স্রেফ ২-৩ ফোঁটা যে কোনো বেবি অয়েল মেখে নিন। তৈলাক্ত ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করাই উচিত।

রাত্রে লাগানোর ক্রিম ভিটামিন ই যুক্ত হলে উপকার হয়। কারণ ভিটামিন ই ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখে। এছাড়া ক্রিমের মধ্যে এই ভিটামিন মেশানো থাকলে, ক্রিমটি অনেকদিন পর্যন্ত ভালো ও ব্যবহারযোগ্য থাকে। ভালো কোম্পানির ওভারনাইট ক্রিম সব বয়সের জন্যই ভালো। বিদেশী নারিশিং ক্রিম ব্যবহার করাই ভালো। বিদেশী ক্রিমে থাকে কোলাজেন ও ইলাসটিন যা ত্বকের কোষগুলোকে নতুনভাবে কার্যকর করে তোলে। এছাড়া থাকে লাইপোসোম, যা ত্বকের গভীরে গিয়ে ত্বককে প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগায়। এ রকম ক্রিম রাতে ব্যবহার করলে ত্বক ভালো থাকে।

ব্রণের জন্যঃ যাদের ত্বক তৈলাক্ত ও ব্রণ আছে, তারা প্যাক ধুয়ে ফেলে ময়েশ্চারাইজারের বদলে ব্যবহার করুন অ্যাসট্রিনজেন্ট। ঘরোয়া অ্যাসট্রিনজেন্ট হলো গোলাপজল ও শশার রস। এগুলো ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে নিলে আরও ভালো। শশার রস করে বরফ জমানোর পাত্রে রেখে আইস-কিউব করে নিতে পারেন। প্রতি রাতে রস বানানোর ঝামেলায় না গিয়ে একটি কিউব মুখে ঘষে নিন।

সমপরিমাণে পুদিনা পাতা ও নিমপাতা বেটে শুধু ব্রণ ও দাগের উপর লাগিয়ে ঘুমান। সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন। পুদিনা পাতা ব্যবহার করতে পারেন ফেসপ্যাকেও। ব্রণের জন্য ভীষণ উপকারী।

চোখঃ চোখের ডার্ক সার্কেল কমাতে ঘুমানোর আগে কুরানো শশা বা আলু ঠাণ্ডা হলে ভালো বা ঠাণ্ডা টি-ব্যাগ চোখের উপর দিয়ে রাখুন ১০-১৫ মিনিট।

হাত ও পাঃ প্রতি রাতে পা ধুয়ে লোশন লাগিয়ে ঘুমাতে যান। এছাড়া নিয়মিত যত্ন হিসেবে সপ্তাহে দু-একবার যেটা করতে পারেন তা হলো—রাতে পা প্রথমে সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে, ২ টেবিল চামচ কুসুম গরম অলিভ অয়েল+১ চা চামচ লবণের মিশ্রণ তৈরি করে সেটা পায়ে ভালো করে মাসাজ করুন। এতে মৃতকোষ ঝরে যাবে, গোড়ালি নরম হবে, রক্ত চলাচল ভালো হবে। এর বদলে মুখের জন্য যে স্ক্রাব ব্যবহার করেন, তা দিয়েও মাসাজ করতে পারেন। ধুয়ে লোশন লাগিয়ে শুয়ে পড়ুন। সারাদিন পর পা দুটোকে যথোপযুক্ত আরাম দিন। হাতের যত্নও নিতে পারেন একইভাবে। মুখ, হাত, পা যে কোনো মাসাজই করতে হবে হালকা হাতে, আলতোভাবে। তা না হলে হিতে বিপরীত হয়ে যেতে পারে।

চুলঃ যাদের বড় চুল, তারা বেণী করে নিন ঘুমানোর আগে। তাতে চুল সারা রাত ঘষা খাবে না। ছোট চুল হলে খোলা রেখে শুলেও অসুবিধা নেই। তেল মাসাজ করে শুলে ঘুম ভালো হবে।

নখঃ নখ ফেটে বা ভেঙে যাওয়ার সমস্যা কমাতে ঘুমানোর আগে হাত-পায়ের নখে জলপাই তেল (অলিভ অয়েল) ম্যাসাজ করে নিন। সারা রাত নখ আর্দ্রতা পাবে।

ঠোঁটঃ সবই যখন হল, বাদ যায় কেন ঠোঁটজোড়া ? নরম গোলাপি ঠোঁট পেতে প্রতি রাতে ভ্যাসলিনের সঙ্গে অল্প লবণ মিশিয়ে ঠোঁটে ম্যাসাজ করে ধুয়ে নিন। এতে ঠোঁটের মৃত কোষ ঝরে উজ্জ্বলতা আসবে।

  • কিছু পরামর্শঃ

  • – কখনওই মেকআপ না মুছে ঘুমাতে যাওয়া উচিত নয়। মেকআপ যখনই করুন, মুখ পরিষ্কার করতে হবে তা না হলে ত্বকের ক্ষতি হবে।
  • কী ধরনের ক্রিম ব্যবহার করবেন সেটা যতটা গুরুত্বপূর্ণ তেমনি গুরুত্বপূর্ণ কতটা ক্রিম ব্যবহার করেন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য কম ক্রিম ব্যবহার করতে হয়। তবে যাদের ব্রণ আছে তাদের নাইট ক্রিম ব্যবহার না করাই ভালো। শুষ্ক ত্বকের জন্য বেশি পরিমাণে ক্রিম প্রয়োজন।
  • – নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করাও অত্যন্ত জরুরী। সারাদিনে ত্বক থেকে ময়েশ্চার নষ্ট হয়ে যায়, রাতে তা না হলে ত্বকে বলিরেখা পড়বে। যারা বাড়ির কাজ করেন, প্রত্যেকবার হাত ধুয়ে নিলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় ও বলিরেখা পড়ে। তাই নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা দরকার। এতে ত্বকে পুষ্টি যোগায়।
  • – নিয়মিত পানি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। পেট পরিষ্কার রাখার জন্যও পানি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
  • রাতে খাওয়ার পর খেতে পারেন এক কাপ চায়নিজ জেসমিন টি, এতে শরীরে মেদ জমবে না। ঘুমানোর আগে একগ্লাস পানি খেয়ে নিন। নিয়মমাফিক পরিচর্যা, সুষম খাবার, সুন্দর জীবনযাপন আপনাকে ভালো ও সুস্থ রাখবে আর সুস্থতা প্রতিফলিত হবে আপনার বাহ্যিক সৌন্দর্যে। তাই আপনার বিরামহীন কর্মব্যস্ততার মধ্যেও ঘুমের আগে এটুকু ঘরোয়া পরিচর্যায় আপনি থাকবেন একদম সুস্থ, প্রাণবন্ত, সুন্দর।

লিখেছেন- রোজেন

দেশী কাঁচা রসুন Garlic খেলে পুরুষের শারীরিক সক্ষমতা ৩ গুণ বেড়ে যায়, জেনে নিন কীভাবে খাবেন

ফেসবুক পেজ

আমাদের সাইটে কোন প্রকার অশ্লীল আর্টিকেল দেওয়া হয় না। মূলত যৌন জীবনকে সুস্থ্য, সুন্দর ও সুখময় করে তোলার জন্য জানা অজানা অনেক কিছু তুলে ধরা হয়।এরপরও আপনাদের কোর প্রকার অভিযোগ থাকলে Contact Us মেনুতে আপনার অভিযোগ জানাতে পারেন, আমরা আপনাদের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব। ধন্যবাদ আমাদের সাইটের সাথে থাকার জন্য।

 

Spread the love

Check Also

ব্রণ

পিঠ ভরে গিয়েছে ব্রণ? খরচ না করেই ঘরোয়া উপকারে মিলবে মুক্তি!

অষ্টমীর দিন পিঠখোলা ব্লাউজ পরে কেতা তো দেখাতেই হবে। কিন্তু সেই সময় যদি পিঠে জ্বলজ্বল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *