Friday , 20 September 2024

শেখ হাসিনার গন্তব্য কোথায় হবে?

শেখ হাসিনা কি পশ্চিমা দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় পাবেন?ক্ষমতা ছেড়ে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাবার পর শেখ হাসিনার চূড়ান্ত গন্তব্য কোথায় হবে, সেটি এখনো পরিষ্কার নয়। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর পরিষ্কারভাবেই জানিয়েছেন যে শেখ হাসিনার জন্য ভারত শেষ গন্তব্য নয়।

শেখ
শেখ হাসিনার গন্তব্য কোথায় হবে?

আকবর হোসে “বিবিসি নিউজ বাংলা’ বলেন,

মি. জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, খুব কম সময়ের নোটিশে শেখ হাসিনা ‘সাময়িকভাবে’ ভারতে আসার অনুমতি চান।

শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় জানিয়েছেন তার মা কোথাও রাজনৈতিক আশ্রয় চাননি।

তাহলে শেখ হাসিনার গন্তব্য কোথায় হবে?

ব্রিটেন, আমেরিকা কিংবা অন্য কোন পশ্চিমা দেশ কি তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেবে?

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এসব কিছুই নির্ভর করছে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো বিষয়টিকে কীভাবে দেখছে তার ওপর।

পশ্চিমে আশ্রয় পাওয়া কঠিন হবে

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ-এর গবেষক টম কিন বিবিসি বাংলাকে বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোতে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়া শেখ হাসিনার জন্য খুব ‘কঠিন’ হবে। এমনকি সম্ভব নাও হতে পারে।

গত কয়েকদিনে খবরা-খবর বের হয়েছে যে, শেখ হাসিনা শেষ মুহূর্তেও পুলিশ এবং সেনা বাহিনীকে আরো বেশি বল প্রয়োগ করতে বলেছিলেন। কিন্তু সেটি সম্ভব হয়নি।

ওয়াশিংটন-ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়া ইনিস্টিটিউট-এর পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান মনে করেন, পশ্চিমা কোন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়া শেখ হাসিনার জন্য খুব কঠিন হবে।

শেখ হাসিনার শাসনামলে, বিশেষ করে গত কয়েকদিনে যা ঘটেছে, সেটা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো খুবই মর্মাহত হয়েছে।

মি. কুগেলম্যান বিবিসি বাংলাকে বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে যে প্রবল শক্তি প্রয়োগ করেছে এবং শেখ হাসিনা সরকারের যে দমন-পীড়ন ছিল সেটি নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর খুবই আপত্তি ছিল।

“এটা শেখ হাসিনার জন্য খুবই চিন্তার বিষয় হবে, কারণ তার পরিবারের অনেক সদস্য পশ্চিমা দেশগুলোতে বসবাস করে। শেখ হাসিনার মানবাধিকার লঙ্ঘণ নিয়ে যেসব দেশ মাথা ঘামায় না, তারা হয়তো তাকে আশ্রয় দিতে পারে।

এটা পশ্চিমা দেশগুলোর বাইরে কোন দেশ হতে পারে, কিংবা গাল্ফ দেশগুলোতে হতে পারে,” বলেন মি. কুগেলম্যান।

ছাত্র বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনী যে শক্তি প্রয়োগ করেছে সেটির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ও জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল। তারপরেও শক্তি প্রয়োগ করা থেকে শেখ হাসিনা সরকারকে নিবৃত্ত করা যায়নি।

“সে চেয়েছিল ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আরো বেশি মানুষ হত্যা করতে,” বলেন ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ-এর টম কিন।

তিনি মনে করেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত যদি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বিষয়গুলো তদন্ত করে এবং কোন বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয় সেটি ভিন্ন পরিস্থিতির তৈরি করবে।

সেক্ষেত্রে তিনি ব্রিটেনে থাকলেও নিরাপদে থাকতে পারবেন না।

অতীতে বিভিন্ন সময় দেখা গেছে পতিত স্বৈরাচারদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেবার নজির রয়েছে ইউরোপ কিংবা আমেরিকায়। কোন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে ক্ষমতাচ্যুত একনায়কদের আশ্রয় দিয়েছে সৌদি আরব।

তাহলে শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে পশ্চিমা দেশগুলোর ব্যতিক্রম হতে পারে কেন?

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এসব ঘটনা ঘটেছে স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী অবস্থায়। অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশে স্বৈরশাসকদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে। তাদের পতনের পর ইউরোপ কিংবা আমেরিকায় অনেকে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছেন।

টম কিন বলেন, “ বাংলাদেশে যা হয়েছে সেটি সবাই দেখেছে। প্রচুর ভিডিও-ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসেছে। বিশ-ত্রিশ বছর আগে বিষয়গুলো এতো দ্রুত ছড়াতো না। যে পরিমাণ রক্তপাত হয়েছে এবং শেখ হাসিনার প্রতি যে দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়েছে সেটি বেশ নেতিবাচক। ”

“স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ইউরোপ এবং আমেরিকা তাদের মিত্রদের আশ্রয় দিয়েছে। আমার মনে হয়না শেখ হাসিনার প্রতি তাদের কোন দায়বদ্ধতা আছে।,”এ কথা উল্লেখ করে টম কিন বলেন শেখ হাসিনা অতীতে কখনো কখনো পশ্চিমাদের পছন্দের তালিকায় যেতে পেরেছে, কিন্তু মিত্র হয়ে উঠতে পারেনি।

তাছাড়া ইউরোপ এবং আমেরিকায় অনেক বাংলাদেশি বসবাস করেন। সম্প্রতি ছাত্র বিক্ষোভে তাদের অধিকাংশ সমর্থন যেমন দিয়েছেন, তেমনি শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতেও সরব হয়েছেন।

টম কিন বলেন, ইউরোপ ও আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে অনেকই আছেন যারা সেসব দেশের নীতি-নির্ধরানী পর্যায়ে বিষয়গুলো তুলে ধরতে পারেন। এ কারণেও শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দেবার বিষয়ে চিন্তা করবে পশ্চিমা সরকারগুলো।

স্বৈরশাসকরা কোথায় যায়?

স্বৈরশাসকদের হাত থেকে যখন ক্ষমতা ফসকে যায়, সেটা বেশ বিপজ্জনক হয়ে ওঠে তার জন্য। তাদের ক্ষমতা শেষ শেষের দিকে চলে আসে তখন শাস্তি, কারাদণ্ড কিংবা জীবনের ঝুঁকি তৈরি হয়।

সেজন্য স্বৈরশাসকদের ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। জনরোষ থেকে বাঁচার জন্য তাদের সামনে এটাই একমাত্র পথ খোলা থাকে।

বিপ্লব, গণঅভ্যুত্থান, সামরিক অভ্যুত্থান এবং গৃহযুদ্ধের কারণে যখন ক্ষমতা হারানোর ঝুঁকি তৈরি হয়, তখন তারা দেশের বাইরে নিরাপদ আশ্রয় খোঁজে।

স্পেনের বার্সেলোনা ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক আবদেল এসক্রেবা ফোলক এবং যুক্তরাষ্ট্রের নর্থয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ডানিয়েল ক্রামারিক স্বৈরশাসকদের গন্তব্য নিয়ে গবেষণা করেছেন।

তারা লিখেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে দেখা গেছে, স্বৈরশাসকদের ক্ষেত্রে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া তাদের পছন্দের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে যত স্বৈর শাসক ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন, তাদের মধ্যে ২০ শতাংশ নির্বাসনে গিয়েছিলেন।

সূত্রঃ BBC NEWS বাংলা।

সজীব ওয়াজেদ; শেষ পর্যন্ত সরকার উৎখাতে গড়াবে

আওয়ামীলীগ ছাড়া নতুন বাংলাদেশ সম্ভব নয় “জয়”

ফেসবুক পেজ

মূলত যৌন জীবনকে সুস্থ্য, সুন্দর ও সুখময় করে তোলার জন্য জানা অজানা অনেক কিছু তুলে ধরা হয়।

এরপরও আপনাদের কোর প্রকার অভিযোগ থাকলে Contact Us মেনুতে আপনার অভিযোগ জানাতে পারেন,

আমরা আপনাদের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব

Spread the love

Check Also

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধ ঘোষণা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধ রাখার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *