Friday , 20 September 2024

শেখ হাসিনার পরবর্তী গন্তব্য,সজীব ওয়াজেদ জয়

শেখ হাসিনার পরবর্তী গন্তব্য নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে কিছু কথা  বললেন তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়।পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় জানিয়েছেন, অন্য দেশে শেখ হাসিনার আশ্রয় চাওয়া নিয়ে যে তথ্যগুলো প্রকাশ পেয়েছে তা অসত্য।বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনও দেশের কাছে এখনও আশ্রয় চাননি। আপাতত তিনি দিল্লিতেই থাকবেন কিছুদিন -একথা ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়।

শেখ
শেখ হাসিনার পরবর্তী গন্তব্য,সজীব ওয়াজেদ জয়

একইসঙ্গে, শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্র বা মার্কিন মুলুকে আশ্রয়ের আবেদন জানানো নিয়ে যে সকল তথ্য সাম্প্রতিককালে প্রকাশ পেয়েছে তাও সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন মি. ওয়াজেদ।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওয়াশিংটনের বাসিন্দা মি. ওয়াজেদ বলেছেন, “ওর (শেখ হাসিনার) আশ্রয়ের অনুরোধ সম্পর্কিত যে সমস্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে, সেগুলো সম্পূর্ণ অসত্য। আশ্রয়ের জন্য কোথাও অনুরোধ করেননি তিনি।”

“কাজেই ব্রিটেনের প্রশ্ন বা আমেরিকার তরফে আশ্রয়ের অনুরোধের বিষয়ে এখনও সাড়া না দেওয়ার ব্যাপারটাও অসত্য।”

গত পাঁচই আগস্ট পদত্যাগ করে বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে আসার পর থেকেই কোথায় তিনি ‘পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম’ বা রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে পারেন সে বিষয়ে বিস্তর জল্পনা শুরু হয়।

কোনও সূত্রে দাবি করা হয়, তিনি যুক্তরাজ্যে আশ্রয় নিতে চান। কোনও সূত্রে আবার দাবি করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের তরফে সবুজ সংকেত পাওয়া যায়নি বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মি. ওয়াজিদের বক্তব্য, এর সবই অসত্য।

যুক্তরাষ্ট্রের তরফে তার ভিসা প্রত্যাখ্যানের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ নিয়ে কোনও আলাপ আলোচনাই হয়নি।”

এর পাশাপাশি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে, মা শেখ হাসিনা সম্পর্কে একাধিক উল্লেখযোগ্য তথ্য জানিয়েছেন মি. ওয়াজেদ।

আরও একবার জোর দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশ ছাড়তে চাননি তার মা, বরং থাকতে চেয়েছিলেন। একইসঙ্গে জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তার মমামতও।

‘আপাতত কিছুদিন দিল্লিতেই থাকবেন’

সোমবার খুব অল্প সময়ের নোটিসে ভারতে চলে আসেন শেখ হাসিনা। ঢাকা থেকে ভারতে আসার পর আপাতত নিরাপদ আস্তানাতেই রয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী।

তবে এরপর কোন দেশে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয় নিতে পারেন সে নিয়ে সম্পর্কে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক মহলে বিস্তর আলোচনা হচ্ছে। যদিও মি. ওয়াজেদের দাবি শেখ হাসিনার পরবর্তী গন্তব্য সম্পর্কে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস নাও-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মি. ওয়াজেদ বলেছেন, “উনি (শেখ হাসিনা) এখনও এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। আপাতত কিছুদিনের জন্য দিল্লিতে থাকবেন তিনি।”

“আমার বোনও দিল্লিতেই থাকে, তাই তিনি (শেখ হাসিনা) এক নন। এরপর তিনি কোথায় যাবেন সে বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেননি।”

প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল সায়মা ওয়াজেদ ওয়ার্ল্ড হেল্থ অর্গানাইজেশনের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন। দিল্লিতে কর্মরত তিনি।

তার মা যে সুস্থ আছেন, সেকথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন মি. ওয়াজেদ। নেটওয়ার্ক ১৮-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “মায়ের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। দিল্লিতে ভালো আছেন, যদিও (বাংলাদেশের) বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি খুবই হতাশ।”

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

শেখ হাসিনা যে আর রাজনীতিতে ফিরবেন না, সেকথা বিবিসিকে আগেই জানিয়েছিলেন মি. ওয়াজেদ। তার এই ঘোষণা খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল।

মঙ্গলবার বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সে কথারই পুনরাবৃত্তি করেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়।

এনডিটিভিকে তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশের রাজনীতিতে উনি (শেখ হাসিনা) আর ফিরবেন না। এমনিতেও তিনি অবসর নেওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। এটাই তার শেষ মেয়াদ হতো।”

কিন্তু রাজনীতির আঙিনাথেকে অবসর নিয়ে কীভাবে দিন কাটাবেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী যিনি দীর্ঘ পনেরো বছর বাংলাদেশে ক্ষমতায় ছিলেন? এই প্রশ্নের উত্তরে মি. ওয়াজেদ জানিয়েছেন, একসঙ্গে সময় কাটানোর পরিকল্পনা করছে তাদের পরিবার। যদিও কোথায়, কীভাবে হবে সংক্রান্ত খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

তিনি বলেছেন, “আমি ওয়াশিংটনে আছি, আমার খালা লন্ডনে থাকেন, বোন দিল্লিতে থাকে। তাই আমরা জানি না, কীভাবে এটা (সকলের একসঙ্গে সময় কাটানো) হবে। হয়ত এক জায়গা থেকে অন্যত্র ভ্রমণ করতে পারেন।”

‘মা দেশ ছাড়তে চাননি’

প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর তার বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে দেশ ছেড়ে চলে আসা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের জন্য কটাক্ষের শিকারও হতে হয়েছে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে। কিন্তু মি. ওয়াজেদ দাবি করেছেন, তার মা রাজি ছিলেন না দেশ ছাড়তে।

“উনি কিন্তু থাকতে চেয়েছিলেন, একেবারেই দেশ ছাড়তে চাননি। কিন্তু আমরা জোর করি। বলতে থাকি যে তার পক্ষে ওখানে থাকাটা আর নিরাপদ নয়।”

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে মি. ওয়াজেদ বলেছেন, “এটা (বর্তমান পরিস্থিতি) তার জন্য খুবই হতাশার কারণ বাংলাদেশকে একটা উন্নত দেশে পরিণত করা তার স্বপ্ন ছিল।”

“এর জন্য গত ১৫ বছর ধরে তিনি কঠোর পরিশ্রম করেছেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ থেকে নিরাপদ রেখেছেন। তা সত্ত্বেও এই সোচ্চার সংখ্যালঘু, বিরোধী দল, জঙ্গিরা এখন ক্ষমতা দখল করেছে।”

“আমরা তার শারীরিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলাম; তাই দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য রাজি করিয়েছি,” এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন মি ওয়াজেদ।

সিএনএন-নিউজ ১৮-কে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে ওয়াজেদ বলেন, “তিনি ছাত্রদের গণহত্যা চাননি এবং সে কারণেই তিনি নিজেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”

আওয়ামী লীগের নেতা ও সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মি. ওয়াজেদ। জানিয়েছেন, এই রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতা, সমর্থক ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার যে সব ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে তা নিয়ে তিনি বেশ চিন্তিত।

এনডিটিভিকে তিনি বলেন, “আমাদের সব সাংসদ-মন্ত্রীর বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমি ভারত সরকারের সহায়তা চাইব।”

“এটা কোনও রাজনৈতিক আন্দোলন নয়। এটা যদি রাজনৈতিক আন্দোলন হয়ে থাকে, তাহলে ওরা মানুষকে হত্যা করছে কেন?”

শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলার অভিযোগ তোলেন মি. ওয়াজেদ।

এই প্রসঙ্গে মি. ওয়াজেদ বলেছেন, “গতবার জামাত-এ-ইসলামী যখন ক্ষমতায় ছিল তখন সংখ্যালঘুদের ওপর নিয়মিত হামলা হয়েছে। সেগুলো কিন্তু এখন আবার শুরু হয়েছে-অগ্নিসংযোগ, লুটপাট চালানো, মানুষ হত্যা করা, মন্দির ও সংসদ ভাঙচুর করা। যে ছবি আপনারা দেখছেন তা কোনও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিক্ষোভ জানানো মানুষের নয়, এগুলো সহিংস জনতার ছবি।”

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কেমন জানতে চাইলে সজীব ওয়াজেদ জয় জানিয়েছেন, এ নিয়ে আসার আলো দেখতে পাচ্ছেন না তিনি। তার মতে সিরিয়ায় পরিণত হওয়ার দিকে হাঁটছে বাংলাদেশ।

তার কথায়, “আমি পাকিস্তানের কথা বলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে বাংলাদেশ সিরিয়ার মতো হয়ে যাচ্ছে।”

তিনি বলেন, “ওরা (বাংলাদেশের জনগণ) নিজেদের ভবিষ্যৎ স্থির করে ফেলেছে। এখান এটা নিয়েই ওদের তাদের বাঁচতে হবে। পরিস্থিতি অন্ধকার, অর্থনৈতিক বিকাশ বন্ধ হয়ে যাবে, জঙ্গিবাদ অব্যাহত থাকবে।”

সূত্রঃবিবিসি নিউজ বাংলা।

ইউনূস সাহেবের নতুন পরিচয়

সংখ্যালঘুদের নির্যাতন নিয়ে মার্কিন দূতাবাসের উদ্বেগ

ফেসবুক পেজ

 

মূলত যৌন জীবনকে সুস্থ্য, সুন্দর ও সুখময় করে তোলার জন্য জানা অজানা অনেক কিছু তুলে ধরা হয়।

এরপরও আপনাদের কোর প্রকার অভিযোগ থাকলে Contact Us মেনুতে আপনার অভিযোগ জানাতে পারেন,

আমরা আপনাদের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব।

Spread the love

Check Also

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধ ঘোষণা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধ রাখার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *