Thursday , 19 September 2024

হাদিস এর বর্ণনায় চোখের পাপ

চোখ অন্তরের শাহি ফটক। অন্তর পর্যন্ত পাপ প্রবেশের প্রশস্ত রাস্তা। চোখের কারণে মানুষ বহু মন্দ কাজে জড়িয়ে পড়ে। চোখ অন্তরের ধ্বংস ত্বরান্বিত করে।

চোখের
হাদিস এর বর্ণনায় চোখের পাপ

 

হাদিস এর বর্ণনায় চোখের পাপ

কোরআন-হাদিসে মানুষকে দৃষ্টি সম্পর্কে বারবার সাবধান করা হয়েছে। চলুুন, চোখের পাপের ভয়াবহতা হাদিস থেকে জেনে নিই।

চোখ আল্লাহ কর্তৃক বান্দাকে প্রদত্ত মহান নিয়ামত। তিনি আমাদের চোখ দিয়েছেন নিদর্শনাবলি দেখতে।

বান্দার উচিত সে নিয়ামত ব্যবহারে আপন স্রষ্টাকে চেনা; তাঁর কৃতজ্ঞ থাকা। আল্লাহ বলেছেন, ‘দেখো, আমি কিভাবে নিদর্শনাবলি বর্ণনা করি, যাতে তারা বুঝে নেয়।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৬৫)

দৃষ্টি শয়তানের বিষাক্ত তীর:

মানুষকে কুপথে পরিচালিত করতে শয়তান যে সব অস্ত্রের সাহায্য নেয়। মানুষের চোখ তার অন্যতম।

দৃষ্টি শয়তানের বিষাক্ত তীর। ইবনু মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘দৃষ্টি শয়তানের বিষাক্ত তীর। যে ব্যক্তি আল্লাহর ভয়ে দৃষ্টির হেফাজত করবে, তৎপরিবর্তে আল্লাহ তাকে এমন ঈমান দান করবেন, যার মিষ্টতা সে অন্তরে অনুভব করবে।’ (তাবরানি, হাদিস : ১০৩৬২)

দৃষ্টির অরক্ষণ মনকে অশান্ত করে:

চোখের অনৈতিক ব্যবহারে মন অশান্ত হয়।

না পাওয়া আর আক্ষেপের অনলে দহন হতে হয়। ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেছেন, যে ব্যক্তি দৃষ্টিকে ছেড়ে দেয়, তার আফসোস ও মনোবেদনা স্থায়ী হয়। অন্তরের জন্য অধিক ক্ষতিকর হলো চোখকে ছেড়ে দেওয়া, উম্মুক্ত করে দেওয়া। কেননা, সে তাকে এমন জিনিস দেখায়, যা থেকে সে ধৈর্য ধারণ করতে পারে না এবং তা অর্জনও করতে পারে না। আর এটা বড়ই কষ্টদায়ক।
(রওজাতুল মুহিব্বিন, পৃষ্ঠা-১১৩)

 

অযাচিত দৃষ্টির পর আবার দৃষ্টি নয়:

অযাচিত নিষিদ্ধ বস্তুতে দৃষ্টিপাতের ব্যাপারে মানুষের সর্বদা সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা উচিত। যেন হারাম কোনো বস্তুতে চোখ আটকে না যায়। একান্ত যদি দৃষ্টি পড়েই যায়, তাহলে দ্রুত চোখ সরিয়ে নেওয়া একজন সাচ্চা মুসলিমের একান্ত কর্তব্য। নবীজি (সা.) আলী (রা.)-কে সম্বোধন করে বলেছিলেন, হে আলী! দৃষ্টিকে দৃষ্টির অনুগামী কোরো না (অযাচিত দৃষ্টির পরে ইচ্ছাকৃত দৃষ্টি দিয়ো না); কেননা প্রথমটি তোমার জন্য বৈধ হলেও দ্বিতীয়টি অবৈধ। (তিরমিজি, হাদিস : ২৭৭৭)

 

ব্যক্তির বিরুদ্ধে চোখের সাক্ষ্যদান

কিয়ামতের দিন মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তার পক্ষে অথবা বিপক্ষে সাক্ষ্য দেবে। ভালো কাজের স্বীকারোক্তির সঙ্গে সঙ্গে খারাপ কাজগুলোর বর্ণনা দেবে অকপটে। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই কান, চোখ ও অন্তর এদের প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত হবে।’

(সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৩৬)

 

অবৈধ বস্তুর প্রতি তাকানোর শাস্তি

হারাম বস্তু থেকে আমাদের চোখ সরতেই চায় না। পরনারী কিংবা পরপুরুষ দেখলে চোখ ফেরানোর বদলে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখি। নাটক, সিনেমা, টিভি কিংবা সিনেমার পর্দায়, মোবাইলের স্ক্রিনে, পোস্টার আর বিলবোর্ডে সর্বত্র চোখের খিয়ানত। চোখের পাপ। এ পাপ থেকে হবে কি মাফ? আবু হুরায়রা (রা.) নবীজি (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘চোখের জিনা (হারাম জিনিসের প্রতি) তাকানো।’ (বুখারি, হাদিস : ৬১২২)

বউ-শাশুড়ির মধুর সম্পর্ক করবেন যে উপায়ে

রূপচর্চায় জবা ও গোলাপ ফুলের ব্যবহার

চোখের পাপ থেকে বাঁচতে:

চোখের অপরাধ থেকে বাঁচতে অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করা আবশ্যকীয়। সামর্থ্য থাকলে দ্রুত বিবাহ করা নেওয়া, নচেত রোজা রাখা উচিত। হারাম দৃষ্টিপাত চোখের জিনার ভয়াবহতা হৃদয়ে জাগরুক রাখা চাই। যেসব জায়গায় চোখের খিয়ানত হয় সেসব জায়গায় গমনাগমন থেকে নিজেকে বিরত রাখা। খারাপ কিছু দেখলে ত্বরিত ইস্তিগফার করা। সর্বোপরি পূর্ণ একনিষ্ঠতার সঙ্গে নামাজ আদায় করা। কারণ ‘নামাজ অশ্লীল ও গর্হিত কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা : আনকাবুত, আয়াত : ৪৫)

লেখক : খতিব, বাইতুল আজিম

জামে মসজিদ, রংপুর

ফেসবুক পেজ

এরপরও আপনাদের কোর প্রকার অভিযোগ থাকলে Contact Us মেনুতে আপনার অভিযোগ জানাতে পারেন,

আমরা আপনাদের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব।

Spread the love

Check Also

পরকালে

পরকালে মুক্তি লাভের বিশেষ তিন কাজ

আল্লাহ তাআলা কোরআনের বিভিন্ন জায়গায় বান্দাকে সহজে পরকালে মুক্তি লাভের পথ নির্দেশ করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *