Friday , 20 September 2024

সাইবার নিরাপত্তা প্রশিক্ষণে সচিব ও ডিজি জনপ্রতি ৭ লাখ ব্যয়

সাইবার নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ। কর্মকর্তাদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়াতে সাইবার নিরাপত্তা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিল তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) অধিদপ্তর। জনপ্রতি প্রায় ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে এই প্রশিক্ষণে প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সরকারি ক্রয়বিধি (পিপিআর) আইন লঙ্ঘন হয়েছে।

সাইবার
সাইবার নিরাপত্তা প্রশিক্ষণে সচিব ও ডিজি জনপ্রতি ৭ লাখ ব্যয়

গত বছরের জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত সাইবার নিরাপত্তা প্রশিক্ষণে আইসিটি বিভাগের সচিব এবং আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ (ডিজি) সাতজন অংশ নেন। উদ্দেশ্য হিসেবে অধিদপ্তর বলেছিল, সরকারের বিভিন্ন সাইবারবিষয়ক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষমতা অর্জন এবং সরকারের বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থা ও মাঠপর্যায়ের অফিসে সাইবার নিরাপত্তাসেবা দেওয়া।

আইসিটি বিভাগের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলকের একটি বক্তব্যের পর এই প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০২২ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তথ্য নিরাপদ রাখতে সাইবার সক্ষমতা বাড়ানোর কথা বলেন তিনি।

ওই আয়োজনের ছয় মাস পর প্রতিমন্ত্রীর কথার সূত্র ধরে আইসিটি অধিদপ্তর সাইবার সিকিউরিটি পুল গঠন ও তাদের উচ্চতর প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেয়। সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান ইসি কাউন্সিল সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও সনদ দিয়ে থাকে। বিভিন্ন দেশে তাদের অথোরাইজড (অনুমোদিত) প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বাংলাদেশেও পাঁচটি প্রশিক্ষণপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।

কিন্তু আইসিটি অধিদপ্তর প্রশিক্ষণ ও সনদ নেওয়ার জন্য আইবিসিএস-প্রাইমেক্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে সরাসরি বাছাই করে। এ ক্ষেত্রে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানের নিয়ম থাকলেও সেটি মানা হয়নি। বরং আইবিসিএসকে বাংলাদেশে ইসি কাউন্সিলের একমাত্র প্রতিনিধি উল্লেখ করে তাদের কাছে প্রশিক্ষণ ও সনদের জন্য প্রস্তাব আহ্বান করে অধিদপ্তর। তবে বাংলাদেশে আইবিসিএস ছাড়া ইসি কাউন্সিলের আরও চারটি প্রশিক্ষণ প্রদানের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বিষয়টি এক ই–মেইলের মাধ্যমে প্রথম আলোকে জানিয়েছে ইসি কাউন্সিল।

এ বিষয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত কারিগরি মূল্যায়ন সংস্থার (সিপিটিইউ) সাবেক মহাপরিচালক ফারুক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, যদি আরও পাঁচটি প্রতিষ্ঠান একই সেবা দিয়ে থাকে তাহলে এখানে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান বাছাই করতে হতো। সেটা না করায় আইন ও বিধির ব্যত্যয় ঘটানো হয়েছে। এখন নিরীক্ষা বিভাগ চাইলে এটি খতিয়ে দেখতে পারে।

চুক্তিপত্র থেকে জানা গেছে, আইবিসিএস থেকে ২০২৩ সালের আগস্টে শুরু করে সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত প্রায় দুই মাসের মতো প্রশিক্ষণ নেন এই সাতজন। তবে প্রশিক্ষণার্থী ও প্রশিক্ষণপ্রতিষ্ঠানের দাবি প্রশিক্ষণ শেষ হতে ছয় মাসের বেশি সময় লেগেছে।

এই প্রশিক্ষণে অংশ নেন আইসিটি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন, আইসিটি অধিদপ্তরের সদ্য সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মোস্তফা কামাল, সিস্টেমস ম্যানেজার মো. মাসুম বিল্লাহ, প্রোগামার হারুন অর রশিদ, আবদুল্লাহ আল রহমান, গোলাম মাহবুব ও তানিয়া নূর।

সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক ছয়টি কোর্সের এই প্রশিক্ষণের জন্য অধিদপ্তর ৪৮ লাখ ২০ হাজার টাকার চুক্তি করেছিল। ইসি কাউন্সিলের পরীক্ষা দেওয়া এবং প্রশিক্ষণের জন্য এই টাকা লেগেছে বলে জানিয়েছে অধিদপ্তর ও আইবিসিএস।

সচিব ও মহাপরিচালক অধিদপ্তরের স্থায়ী কর্মকর্তা নন। তাঁরা যেকোনো সময় বদলি হয়ে যেতে পারেন, তা সত্ত্বেও সাইবার নিরাপত্তা প্রশিক্ষণে তাদের অংশ নেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

সচিব সামসুল আরেফিন ফিন্যান্স নিয়ে পড়াশোনা করেছে। অন্যদিকে সাবেক মহাপরিচালক মোস্তফা কামাল মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। তাঁকে সম্প্রতি বদলি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়েছে।

প্রশিক্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে সামসুল আরেফিন প্রথম আলোকে বলেন, প্রশিক্ষণ মূলত প্রোগ্রামারদের জন্যই ছিল। তাঁর নামও যুক্ত করা হয়েছিল। তবে তিনি নিয়মিত প্রশিক্ষণে অংশ নিতে পারেননি। আর প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান বাছাই না করার বিষয়টি তিনি জানতেন না বলে দাবি করেন।

অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে সাবেক মহাপরিচালক মোস্তফা কামালকে ফোন করা হলে সাড়া দেননি। হোয়াসটসঅ্যাপে বার্তা পাঠিয়ে জবাব পাওয়া যায়নি।

প্রশিক্ষণের সূচিতে বলা হয়েছে, সচিব ও মহাপরিচালক অনলাইনে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অংশ নেবেন। কিন্তু উল্লিখিত কয়েকটি সূচির তারিখে তাঁরা দুজনই সরকারি বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন বলে বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ও পরিচালক বি এম মইনুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের প্রশিক্ষণ কার জন্য প্রযোজ্য সেটা দেখতে হবে। সচিব, মহাপরিচালক এ প্রশিক্ষণ নিয়ে কী করবেন এবং তাঁদের প্রয়োজন ছিল কি না, সে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।

সূত্রঃ প্রথম আলো 

চলচ্চিত্রে মনোনয়নপ্রাপ্ত সেরা আট নায়িকা

ফেসবুক পেজ

মূলত যৌন জীবনকে সুস্থ্য, সুন্দর ও সুখময় করে তোলার জন্য জানা অজানা অনেক কিছু তুলে ধরা হয়।

এরপরও আপনাদের কোর প্রকার অভিযোগ থাকলে Contact Us মেনুতে আপনার অভিযোগ জানাতে পারেন,

আমরা আপনাদের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব।

Spread the love

Check Also

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধ ঘোষণা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধ রাখার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *