নিজেই নিজের যৌনাঙ্গ উত্তেজিত করে আনন্দ লাভ করাই হল হস্তমৈথুন বা স্বমেহন। নাম থেকে এই কাজে হস্তের ভূমিকা মুখ্য মনে হলেও অনেক সময় হস্ত ব্যবহার না করেও হস্তমৈথুন করা সম্ভব। সার্ভে করে দেখা গেছে যে পৃথিবীর প্রায় ৯৫% শতাংশ পুরুষ ও ৭০ থেকে ৮০% শতাংশ মহিলা জীবনের কোন না কোন সময় মাস্টারব্রেশন করেছেন। তবে কিছু কিছু সমাজিক ও ধর্মীয় ব্যবস্থায় হস্তমৈথুন করাকে অন্যায় কাজ মনে করা হয়।
রোযাদার ব্যক্তি হস্তমৈথুন করলে কি রোযা ভেঙ্গে যাবে? জেনে নিন
বলা হয় মাস্টারব্রেশন করলে নাকি শরীরের ও মনের ক্ষতি হয়। কিন্তু এমন দাবীর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। পরিমিত মাত্রায় হস্তমৈথুন একটি পুরোদস্তুর স্বাস্থ্যকর বিষয়। এর ফলে মানসিক বা শারিরীক কোন ক্ষতিই হয় না। যদিও মাস্টারব্রেশন করার পদ্ধতি বেশিরভাগ নারী-পুরুষ নিজে থেকেই শিখে যায়, তবুও অনেকের সঠিক উপায়ে মাস্টারব্রেশন করা হচ্ছে কি না সে ব্যাপারে দুঃশ্চিন্তা থাকে। আমরা এই পোস্টে মেয়েদের হস্তমৈথুন করার উপায় সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করবে। তবে উল্লেখ্য যে হস্তমৈথুন একটি ব্যক্তিগত ব্যাপার। তাই ঠিক কিভাবে মাস্টারব্রেশন করলে সবথেকে বেশি তৃপ্তি লাভ হয়ে সেটা নিজেকেই খুঁজে বের করতে হয়। আমাদের এই আলোচনাকে একপ্রকার গাইডলাইন ভাবা যেতে পারে।
মেয়েদের হস্তমৈথুন করার উপায়:
১. যোনিদ্বার বা ভালভা এবং ক্লিটোরিস ঘষে বা স্পর্শ করে উত্তেজিত করাই মেয়েদের হস্তমৈথুন -এর সবথেকে সহজ উপায়। মেয়েদের যৌনাঙ্গের বাইরের অংশই যোনিদ্বার বা ভালভা নামে পরিচিত। যোনির সবথেকে বাইরের ফোলা ঠোটের মত অংশ দুটির নাম ল্যাবিয়া মেজরা বা বৃহদোষ্ঠ। বৃহদোষ্ঠের ভেতরে আরও দুটি পাতলা ঠোটের মত বা পাঁপড়ির মত অংশ থাকে যার নাম ক্ষুদ্রোষ্ঠ বা ল্যাবিয়া মাইনোরা। যোনির উপরের দিকে ক্ষুদ্রোষ্ঠদ্বয় পরষ্পরের সাথে যেখানে মিলিত হয় সেই স্থানে ঘোমটার মত একটু ত্বকের দ্বারা আবৃত একটি ছোট্টো, সাদাটে ও ডিম্বাকৃতি অঙ্গের নাম ক্লিটোরিস বা ভগাঙ্কুর। হাতের একটি, দু্টি (বা যতগুলি ইচ্ছে) আঙ্গুল বুলিয়ে (বা ঘষে) সহজেই বৃহদোষ্ঠ এবং ক্ষুদ্রোষ্ঠ উত্তেজিত করে যৌন আনন্দ লাভ করা যায়। তবে সবথেকে বেশি আনন্দ হয় আঙুল বুলিয়ে ক্লিটোরিস উত্তেজিত করলে। স্নায়ুর আধিক্যের জন্য ক্লিটোরিসে স্পর্শ করলে তীব্র যৌন আনন্দ হয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে ক্লিটোরিস উত্তেজিত করলে মেয়েদের অর্গ্যাজম হবার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি। হস্তমৈথুনের সময় এমনিতেই যৌনাঙ্গ দিয়ে একধরনের তরল ক্ষরিত হয় যা লুব্রিকেন্ট হিসেবে কাজ করে। তবে শুকনো অবস্থায় মাস্টারব্রেশন করা উচিৎ নয়, তাতে পরবর্তীতে ব্যথা হতে পারে। তাই শুরুতে কিছুক্ষণ যৌন চিন্তা করে বা পর্ণ দেখে বা চটি গল্প পড়ে যৌন উত্তেজনার মাধ্যমে যৌনাঙ্গ থেকে তরল বের হতে শুরু করলে তারপর হস্তমৈথুন করতে পারেন। প্রয়োজনে নিজের লালারস কিংবা ভেসলিন জাতীয় লুব্রিকেন্টও ব্যবহার করা যায়। উল্লেখ্য যে ক্লিটোরিসের গঠন অনেকটা পুরুষদের লিঙ্গের মতন।
২. যোনির মধ্যে আঙ্গুল বা অন্য কিছু যেমন ডিলডো, ভাইব্রেটর প্রবেশ করিয়েও হস্তমৈথুন করা যেতে পারে (নারীদের যৌনাঙ্গের ভিতর আঙ্গুল দেয়া কি ঠিক? জেনে নিন)। ওই সময় যদি যোনির সামনের দেওয়ালে অবস্থিত G-spot উত্তেজিত করা যায় তবে আনন্দ আরও অনেক বেশি হতে পারে। G-spot খুঁজে বের করতে হলে যোনির ভেতরে আঙুল প্রবেশ করিয়ে যোনির ২ থেকে ৩ ইঞ্চি ভেতরে যোনির উপরের দেওয়ালের বিভিন্ন স্থানে স্পর্শ করে দেখা যেতে পারে। যে স্থানে স্পর্শ করলে তীব্র যৌন আনন্দ হবে সেটাই g-spot। দুর্ভাগ্যবশত যেহেতু অনেক সংস্কৃতিতে (বা ধর্মে) মেয়েদের সতীচ্ছদ বা হাইমেনের উপস্থিতি তার কুমারীত্বের প্রমান হিসেবে গন্য করা হয় তাই অবিবাহিত মেয়েদের ক্ষেত্রে যোনির মধ্যে কোন কিছু প্রবেশ করানো ভবিষ্যতে বিয়ের পথে অন্তরায় হতে পারে। এইসকল ক্ষেত্রে হস্তমৈথুনের প্রকৃষ্ঠ উপায় ক্লিটোরিসে আঙ্গুল বুলিয়ে বা আঙ্গুল ঘষে উত্তেজিত করা।
৩. বিছানায় চিৎ হয়ে পা দুটো একটু ফাঁকা করে শুয়ে উপরে বর্ণিত দুটি পদ্ধতি অবলম্বন করে ভালভা, ক্লিটোরিস এবং যোনি আঙুল দিয়ে ঘষে সহজেই হস্তমৈথুন করা যায়। তবে ইচ্ছে হলে বসে, দাঁড়িয়ে, নিলডাউন করে, স্নান করার সময় শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে, ইত্যাদি যে ভঙ্গিমায় সুবিধে সেই ভঙ্গিমাতেই উপরের পদ্ধতি অবলম্বন করে হস্তমৈথুন করতে পারেন। হস্তমৈথুনের সময় এক হাত দিয়ে স্তনের চুচুক, নিতম্ব ইত্যাদিও স্পর্শ করে দেখতে পারেন। তাতে যৌন আনন্দ আরও বেশি হতে পারে।
পড়ুন যোনির যৌবন ধরে রাখার ৭টি উপায় (ভিডিওসহ)
৪. জামা কাপড় পড়া অবস্থায় বিছানায় উল্টো হয়ে শুয়ে দুটো ঊরুর মাঝে বালিশ রেখে বালিশের সাথে যৌনাঙ্গ ঘষেও হস্তমৈথুন করতে পারেন। একটু বৈচিত্রের জন্য দাঁড়ানো অবস্থায় টেবিল ইত্যাদির প্রান্তের সাথে আলতো করে যৌনাঙ্গ ঘষেও মাস্টারব্রেশন করা সম্ভব।
৫. দুটো ঊরু ক্রস করে চেয়ারে বসে (নারীর গোপন অঙ্গে চুলকানি হওয়ার কারণ ও প্রতিকার) (এক ঊরুর উপর অপর ঊরু তুলে বসে) যদি পায়ের পেশী সংকুচিত করার চেষ্টা করা হয় তাহলেও যৌন আনন্দ লাভ হতে পারে। এই পদ্ধতি অবলম্বন করে সকলের সামনে স্বমেহন করলেও কেউ বুঝতে পারবে না যে আপনি কিছু করছেন (যদি না আনন্দ আপনার আওয়াজ বা মুখ-চোখের ভঙ্গিমায় ফুটে ওঠে)।
কী কী জিনিস দিয়ে মহিলারা হস্তমৈথুন করে? আপনি কি জানেন? দেখুন
মোদ্দা কথা হল নিজের যৌনাঙ্গ কিভাবে উত্তেজিত করলে সবথেকে বেশি আনন্দ লাভ হয় সেটা নিজেকেই খুঁজে বের করতে হয়। হস্তমৈথুনের মাধ্যমে এই ভাললাগর উপায় খুঁজে বের করতে পারলে তা সত্যিকারের মৈথুন বা যৌসঙ্গমের সময় অনেক কাজে লাগে। তবে একটু ধীরে সুস্থেই মাস্টারব্রেশন করা উচিৎ, নচেৎ যৌনাঙ্গে আঘাত লাগতে পারে। আর কোন অবস্থাতেই হস্তমৈথুন অভ্যাসে পরিণত হতে দেবেন না। তাতে ভবিষ্যতে সহবাসের সময় যৌন আনন্দ কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।