Friday , 20 September 2024

মহানবী (সা.) যেভাবে বাজার এর নিয়ন্ত্রণ করতেন

বিশ্ব মহানবী বাজারনীতি তথা ইসলামী অর্থনীতিতে বাজারের ব্যাপারে প্রথম মূলনীতি হলো বাজার হতে হবে স্বাধীন। বাজারে স্বাধীনভাবে বিক্রেতা তার মালপত্র নিয়ে এসে বিক্রি করবে আর ক্রেতা তা স্বাধীনভাবে ক্রয় করবে। এ ব্যাপারে কোনো ধরনের কৃত্রিম হস্তক্ষেপ করা চলবে না।

মহানবী
মহানবী (সা.) যেভাবে বাজার এর নিয়ন্ত্রণ করতেন

 

মহানবী (সা.) যেভাবে বাজার এর নিয়ন্ত্রণ করতেন

গ্রাম থেকে পণ্যসামগ্রী বিক্রয়ের জন্য আসা কোনো লোককে শহরবাসী কোনো লোক উপকারের উদ্দেশ্যে ঠকবাজি থেকে বাঁচানোর জন্য যদি দ্রব্যটির সঠিক মূল্য জানায় এবং ভালো উপদেশ দেয়, তবে তা বৈধ।

এমনকি উত্তম কাজ হিসেবে বিবেচিত হবে।

দালালি জায়েজ:

ইসলামী শরিয়া মধ্যস্থতা বা দালালির মাধ্যমে করা উপার্জনকে স্বীকৃতি দেয়। তবে তা হতে হবে ইসলাম নির্দেশিত উপায়ে। ইমাম আহমদ (রহ.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি যদি অন্য একজনকে বলে যে এই কাপড় বিক্রি করে দাও।

অতিরিক্ত যা পাওয়া যাবে তা তোমার, তবে এটা তার জন্য জায়েজ। এ ধরনের দালালি ব্যবসা বা কমিশন এজেন্সি ধরনের কাজ সম্পূর্ণ বৈধ।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মুসলমান নিজেদের পারস্পরিক শর্ত মেনে চলতে বাধ্য।’ (বুখারি)

ধোঁকাবাজি নিষিদ্ধ:

বাজারের স্বাভাবিক মূল্যের চেয়ে পণ্যকে বেশি দামে বিক্রি করার জন্য অনেক অসাধু ব্যবসায়ী বিভিন্ন ধোঁকাবাজির আশ্রয় নেয়।

অনেক ফলের দোকানে দেখা যায়, খারাপ ফলগুলো নিচে রেখে ভালো ফল ওপরে সাজিয়ে রাখে, অনেকে তার পণ্য নিয়ে মিথ্যা বলে, আবার অনেকে অপরিপক্ব ফল ওষুধ দিয়ে পাকায়। বস্তুত বাজারে দ্রব্যমূল্যের স্বাভাবিক গতি স্থির রাখার জন্য ইসলামে ধোঁকাবাজিকে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রতারক ও ধোঁকাবাজের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।’ (তিরমিজি)

নির্ভেজাল পণ্যসামগ্রী বিক্রয় করা:

ইসলামী বাজারনীতির আরেকটি মূলনীতি হলো বাজারে নির্ভেজাল পণ্যসামগ্রী বিক্রয় করতে হবে। ত্রুটিযুক্ত মাল বিক্রি করলে তা ক্রেতার নিকট প্রকাশ করা বাঞ্ছনীয়, অন্যথায় এটা মস্তবড় অন্যায় হিসেবে সাব্যস্ত হবে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) এ সম্পর্কে বলেছেন, ‘ক্রেতা-বিক্রেতার কথাবার্তা যতক্ষণ বিচ্ছিন্ন না হয়ে যাবে, ততক্ষণ তাদের চুক্তি ভঙ্গ করার এখতিয়ার থাকবে। তারা দুজনই যদি সততা অবলম্বন করে ও পণ্যের দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করে, তাহলে তাদের দুজনের এই ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত হবে। আর যদি তারা দুজনেই মিথ্যার আশ্রয় নেয় এবং দোষ গোপন করে তাহলে তাদের এই ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত মূল্যহীন হয়ে যাবে।’

নিত্য পণ্য মজুদ করা হারাম:

বাজারের গতি স্বাভাবিক রাখতে এবং দ্রব্যমূল্য জনগণের পক্ষে রাখতে ইসলাম অতিরিক্ত লাভের আশায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যকে গুদামজাত করে রাখা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ৪০ রাত খাদ্যপণ্য মজুদ করে রাখে সে আল্লাহ থেকে নিঃসম্পর্ক হয়ে গেল।’ (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা)

দ্রব্যমূল্য সাধারণ গতিতে চলা:

ইসলামী বাজারনীতির অন্যতম নিয়ম হচ্ছে স্বাভাবিক গতিতে বাজারে পণ্যের জোগান হবে, আবার স্বাভাবিক গতিতে বিক্রি হবে। চাহিদা কমবেশি হওয়ার ওপর দ্রব্যমূল্যের গতি ওঠানামা করবে।

জুমার সময় কেনাবেচা হারাম:

ইসলামী বাজারনীতিতে সপ্তাহের যেকোনো দিন যেকোনো সময় ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে, তবে জুমার খুতবা শুরুর প্রথমে প্রদত্ত আজানের পর থেকে সালাত শেষ হওয়া পর্যন্ত বাজার কার্যক্রম বন্ধ রাখা অবশ্য কর্তব্য। খোলা রাখা হারাম। মহান আল্লাহ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘হে মুমিনরা! জুমার দিনে যখন তোমাদের সালাতের জন্য ডাকা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাও এবং কেনাবেচা পরিত্যাগ করো, এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা তা উপলব্ধি করো।’ (সুরা : জুমা, আয়াত : ৯)

এভাবে ইসলামী অর্থনীতি জনহিতকর ও ভারসাম্যপূর্ণ বাজারনীতি গোটা পৃথিবীর মানুষের জন্য পেশ করেছে, যা আমাদের সুন্দর জীবন গড়তে সহায়তা করে।

হাদিস এর বর্ণনায় চোখের পাপ

ফেসবুক পেজ

এরপরও আপনাদের কোর প্রকার অভিযোগ থাকলে Contact Us মেনুতে আপনার অভিযোগ জানাতে পারেন,

আমরা আপনাদের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব।

Spread the love

Check Also

খাবার

সকালে নাশতায় যেসব খাবার বাদ দেবেন

ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে সবসময় স্বাস্থ্যকর খাওয়ার খাবার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। একই পরামর্শ দেন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *