চারপাশে এত-শত সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পরেও এদেরই মাঝে বছরের পর বছর ধরে এই যে কিছু সম্পর্কটিকে থাকছে সবসময়, খুব যত্নে আগলে রাখছে নিজেকে- কি করে? যুগ, সময়, প্রযুক্তি, আধুনিকতা আর মানসিকতার পরিবর্তন? হ্যাঁ, এগুলোর হয়তো কিছু প্রভাব রয়েছে। কিন্তু এতকিছুর মাঝেও কি অনেক এমন সম্পর্ক নেই যেগুলো রয়ে গিয়েছে প্রচন্ড শক্ত আর মজবুত। নানা বাঁধা-বিপত্তির পরেও? আছে! ভাঙন শব্দটা বর্তমানেই নয়, ছিল বহুকাল আগে থেকেই। তবে সেই শব্দকে পাশ কাটিয়ে যুগে যুগে একে অন্যের সাথে পুরোটা জীবন সুখী দাম্পত্য সময় কাটিয়ে দিয়েছেন অনেক মানুষ। কাটাচ্ছেন এখনো। ভাবছেন কী সেই সুখের চাবিকাঠি? শুনলে অবাক হবেন, পাঁচটা নয়, দশটা নয়- প্রতিদিনের মাত্র একটি কাজকেই সুখী দাম্পত্য জীবনের প্রধান রহস্য বলে চিহ্নিত করা হয়।
না, অঢেল টাকা নয়, কাজ নয়, নয় বাড়ি-গাড়ির বিশালতাও। দাম্পত্য জীবনকে সুন্দর আর সুস্থ রাখার জন্যে প্রতিদিন যে একটি কাজ করে থাকেন প্রতিটি সুখী জুটি সেটি হচ্ছে একে অন্যের সাথে কথা বলা। আর এই কথা বলার অর্থ সত্যিই কথা বলা (পপসুগার)।
মানুষের ব্যস্ততা সবসময় ছিল, আছে আর থাকবেই। তবে এই ব্যস্ততার মাঝেও আপনাকে ঠিক সময় খুঁজে বের করতে হবে আপনার সঙ্গীর জন্য। না, হয়তো প্রতিদিনই খুব জরুরী কোন কথা থাকবে না আপনাদের। কিন্তু আপনার এই কথা বলতে চাওয়ার ইচ্ছে আর মনোভাবটাই আপনার সঙ্গীকে জানান দেবে যে আপনি তাকে কতটা ভালোবাসেন। হয়তো খুব একটা কঠিন কিছু নয় এটি। তবে এই খুব সহজ কাজটি না করার কারণেই কিন্তু তৈরি হয় প্রচন্ড জটিল অনেক সমস্যা। ভেঙে যায় সম্পর্ক!
পড়ুন বিয়ে না করে পুরুষের সঙ্গে বসবাস করলে মেয়েদের যে ৭টি সুবিধে!
দাম্পত্য জীবনকে সুখী করতে কি করে কথা বলবেন সঙ্গীর সাথে?
তেমন কোন ব্যাপারই নয় এটি। হয়তো আপনার প্রথমে অস্বস্তি লাগতে পারে, আড়ষ্টতা কাজ করতে পারে এভাবে সহজ করে বন্ধুর মতন কথা বলতে। তবে এটা নিশ্চিত করে বলে দেওয়া যায় যে, মন খুলে আলাপ-আলোচনা করা আর গল্প করার ফলে ভালোও বোধ করবেন আপনি অনেক বেশি।
এক্ষেত্রে-
১. নিজের অনুভূতি ও ভাবনা নিয়ে কথা বলুন। আপনার সঙ্গী কিন্তু আপনার সম্পর্কে কখনোই সবটা জানতে পারবে না। ঠিক তেমনটি পারবেন না আপনিও। আর তাই যেকোন ব্যাপরে নিজের চাওয়া-পাওয়ার কথা জানান তাকে। নিজেও তারটা জানুন। এতে করে হয়তো নতুন অনেক কিছু জানতে পারবেন আপনারা নিজেদের সম্পর্কে।
২. সঙ্গীর প্রতি সত্ থাকুন। খুব সামান্য একটা মিথ্যে হয়তো আপনি কখনো বলছেন এখন আপনার সঙ্গীকে। তারমানে কিন্তু এই নয় যে সেটার কোনরকম কোন প্রভাব পড়ছে না কোথাও। এখন হয়তো পড়ছে না। কিন্তু কে জনে! হয়তো পরবর্তীতে কোন একসময় সত্যিটা জেনে গেলে সে। আর মিথ্যে যত ছোটই হোক না কেন সেটা মিথ্যেই। আর তাই সত্যি বলুন। মন খুলে বলুন। এতে করে আপনাদের ভেতরকার দুরত্ব কমে আসবে।
৩. কেবল নিজেই না বলে অন্যকেও বলতে দিন। কথা বলা মানে এই নয় যে কেবল নিজেই বলে চলা। কথা বলার ভেতরে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হচ্ছে অন্যকেও বলতে দেওয়া। আর তাই সঙ্গীকেও বলতে দিন আর তার কথা মন দিয়ে শুনুন।
এমনিতে হয়তো এই ছোট্ট ব্যাপারটিকে খুব একটা দরকারী মনে হচ্ছে না আপনার। কিন্তু বাস্তবে এই ছোট্ট একটি উপাদানই বছরের পর বছর ধরে আরো বেশি মিষ্টি করে তুলছে দাম্পত্য সম্পর্কগুলোকে। তাই আপনিই বা বাদ পড়বেন কেন? চেষ্টা করেই দেখুন না!