গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য সংগঠনের আত্মপ্রকাশ। সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সংগ্রামী ধারাকে রক্ষা করে জনগণের কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠার অঙ্গীকার নিয়ে আত্মপ্রকাশ করল সাংস্কৃতিক কর্মীদের নতুন জোট ‘গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য’।
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর তোপখানা রোডে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই জোটের নাম ঘোষণার মধ্য দিয়ে জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এতে ৩১টি সামাজিক–সাংস্কৃতিক সংগঠন যুক্ত হয়েছে।
শুরুতেই ছাত্র-গণ-আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। উদীচীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের আত্মপ্রকাশের পরিপ্রেক্ষিত, তাদের লক্ষ্য ও দাবি নিয়ে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।
এতে বলা হয়, দেড় বছর ধরে রাজধানীর ৩১টি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে বিভিন্ন প্রতিবাদী কর্মসূচি আয়োজন করেছে। ২০২৩ সালের ৬ মে ‘প্রতিবাদী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ’–এর ব্যানারে শাহবাগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদী কর্মসূচি আয়োজনের মধ্য দিয়ে তাদের ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর তারা সাইবার নিরাপত্তা আইন, অত্যাবশ্যকীয় পরিসেবা বিল বাতিল, গুম, খুন, লুটপাট ও বাজার সিন্ডিকেটের কারণে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে কর্মসূচি আয়োজন করেছেন। তাঁরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও একতরফা নির্বাচন বন্ধের প্রতিবাদে সমাবেশ ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মসূচির আয়োজন করেছেন। বিশেষ করে ছাত্র-গণ-আন্দোলন প্রতিরোধে সাবেক সরকার নির্মম পদক্ষেপ নিলে তাঁরা তীব্র প্রতিবাদ করেন। গণবিক্ষোভ দমনে কারফিউ জারি করা হলে তাঁরাই প্রথম সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে ২৬ জুলাই জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কারফিউ ভঙ্গ করে প্রতিবাদী সমাবেশ ও গানের মিছিল আয়োজন করেন। পরে ৩০ জুলাই জিপিওর সামনে শহীদ নূর হোসেন চত্বর থেকে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক পর্যন্ত প্রতিবাদী গানের মিছিল আয়োজন করেন।
পুলিশি বাধার মুখে তাঁরা রাজপথে অবস্থান নিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে প্রতিবাদী গান, বক্তব্য ও স্লোগান দিয়েছেন। সরকার পতনের পরে তাঁরা হামলা ও নৈরাজ্য বন্ধের আহ্বান জানিয়ে ৭ আগস্ট শাহবাগে সম্প্রীতি সমাবেশ আয়োজন করেন। এসব ধারাবাহিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে অগ্রসরমাণ এই প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর জোটের নাম দেওয়া হয়েছে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য।
গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের নেতারা বলেন, দেশের সাংস্কৃতিক কর্মীদের গণতন্ত্র ও মুক্তিসংগ্রামের দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। স্বৈরাচারী এরশাদবিরোধী গণ–আন্দোলনে জনগণের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে গড়ে উঠেছিল সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। তখন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও পরে জোটের সেই ঐতিহ্য ম্লান হয়ে যায়। নেতারা প্রগতিশীল অবস্থান ত্যাগ করে বিগত বছরগুলোতে ক্ষমতাসীন সরকারের ফ্যাসিবাদী কার্যক্রমের সহযোগীর ন্যক্কারজনক ভূমিকা পালন করেন। তাঁরা বলেন, এই প্রগতির ধ্বজাধারীরা জনগণের মহা দুর্দিনে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর পরিবর্তে মনুষ্যত্ব, বিবেক, নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে গণবিরোধী ব্যবস্থার তল্পিবাহকে পরিণত হয়। এমনকি তারা সরকারের গণহত্যা ও দমন–নিপীড়নের জন্য জারি করা কারফিউয়ের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। এই ঘৃণ্য অপরাধের জন্য তাদের গণহত্যাকারীদের সহযোগী হিসেবে বিচার হওয়া উচিত।
গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের নেতারা বলেন, অচিরেই তাঁরা সারা দেশে গণতন্ত্রকামী প্রতিবাদী সামাজিক–সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে ঢাকায় একটি জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করে গঠনতন্ত্র প্রণয়ন ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করবেন। এখন কোনো সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নেই। ঐক্যভুক্ত সংগঠনগুলোর নেতারাই এটি পরিচালনা করবেন। সংবাদ সম্মেলনে ১১ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সুস্মিতা রায়, সমাজ চিন্তা ফোরামের কামাল হোসেন, প্রগতি লেখক সংঘের দীনবন্ধু দাস, উদীচীর জামশেদ আনোয়ার, বিবর্তনের আমিরুন নুজহাত প্রমুখ।
সূত্রঃ প্রথম আলো
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে
ফেসবুক পেজ
মূলত যৌন জীবনকে সুস্থ্য, সুন্দর ও সুখময় করে তোলার জন্য জানা অজানা অনেক কিছু তুলে ধরা হয়।
এরপরও আপনাদের কোর প্রকার অভিযোগ থাকলে Contact Us মেনুতে আপনার অভিযোগ জানাতে পারেন,
আমরা আপনাদের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব