সব কাজেরই কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে। সেগুলো মেনে চললে বিপত্তি ঘটার সম্ভাবনা থাকে খুবই কম। আবার সামান্য অনিয়মে ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা। শরীর ফিট রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম একটি ভালো অভ্যাস। ব্যায়ামেরও রয়েছে কিছু নিয়মকানুন কিন্তু আমরা অনেকেই সেগুলো ঠিকভাবে জানি না। আবার জানলেও তা মানি না। কিন্তু নিজেকে সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে হলে ব্যায়াম করার নিয়মগুলো ভালোভাবে জানতে হবে এবং মেনে চলারও চেষ্টা করতে হবে। এখানে বলা হলো ব্যায়াম শুরুর এমন কিছু কথা, যা জানাটা জরুরি।ব্যায়াম
ব্যায়াম এর সঠিক সময় ও উপকারিতা জেনে নিন
১. ভরা পেটে ব্যায়াম একদমই করবেন না। তবে খুব বেশি খিদে পেলে তো কষ্ট হবেই। তাই শুরুর আগে দুটি টোস্ট বা একটা আপেলের মতো হালকা কিছু খেতে পারেন।
২. খুব টাইট বা শক্ত পোশাক পরে ব্যায়াম করা ঠিক না। টাইট পোশাক পরলে আপনার করা ভঙ্গিমা কোথাও বাধা পেতে পারে। এর ফলে ব্যায়ামের পুরো সুফল পাবেন না।
৩. জোরে হাঁটা, জগিং বা পায়ের ওপর চাপ পড়বে এমন ভারী ব্যায়াম করার আগে অবশ্যই ভালো ট্রেনিং শু পরবেন। তা না হলে পায়ের সন্ধি বা কোষগুলোতে চাপ পড়ে তো ব্যাথা করবেই, সাথে সাথে পিঠেও ব্যাথা হতে পারে।
৪. ব্যায়াম করার সময় নিঃশ্বাস স্বাভাবিকভাবে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। কখনও খুব কষ্ট করে নিঃশ্বাস নেবেন না। ভালোভাবে নিঃশ্বাস যেন নিতে পারেন এমন করেই ব্যায়াম করবেন। তবে আসন বা যোগব্যায়ামের সময় নিঃশ্বাস নেওয়ার রীতি অবশ্যই আলাদা। এক্ষেত্রে পুরোপুরি আসনের নিয়ম মানতে হবে।
৫. শুরুতেই অনেক সময় ধরে অনেক ভারী ব্যায়াম করবেন না। প্রথমে হালকা ব্যায়াম কম সময় ধরে করুন। প্রতিদিন একটু একটু করে বাড়ান।
৬. ব্যায়াম করার সময় শারীরিক কষ্ট হওয়া মাত্র ব্যায়াম থামিয়ে দেবেন। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ বা প্রশিকের পরামর্শ নিন।
৭. যদি এক ঘণ্টা ব্যায়াম করেন তাহলে প্রথম চার-পাঁচ মিনিট হালকা ও ধীর লয়ের ব্যায়াম করবেন। শেষের দু-তিন মিনিটও তাই।
৮. যে ব্যায়ামই করুন না কেন, শুরুতেই সামান্য স্ট্রেচিং ও ওয়ার্ম আপ অবশ্যই করবেন। না হলে পেশি ও লিগামেন্টে আঘাত লাগার সম্ভাবনা থাকে। এ ব্যাপারগুলো জেনে আপনি নিশ্চয়ই বুঝে গিয়েছেন কীভাবে সঠিক ব্যায়াম করতে হয়। তাই আর দেরি না করে এখন থেকেই নিজেকে আরও আর্কষণীয় ও নজরকাড়া সৌন্দর্যের অধিকারী করতে আজ থেকেই শুরু করুন শরীর সুস্থ রাখার গুরুত্বপূর্ন অনুষঙ্গ ব্যায়াম।
পড়ুন সাঁতার কাটার উপকারিতা
কখন ব্যায়াম করবেন ? –
সকালে ঘুম থেকে উঠেই ব্যায়াম করা যেতে পারে। দীর্ঘ সময় ঘুমের পর সকালে ব্যায়াম সারা দিন ফুরফুরে রাখতে পারে।
এ ছাড়া সন্ধ্যার আগে বিকেলটাও ব্যায়াম করার জন্য উপযুক্ত সময়। যেহেতু ব্যায়াম করলে শরীরের ঘাম ঝরে, তাই নরম আবহাওয়াতেই ব্যায়াম করা ভালো।
দুপুরবেলা বা বেশি গরমে ব্যায়াম করলে সহজেই ক্লান্ত মনে হতে পারে। তাই এ সময়ে ব্যায়াম না করাই ভালো।
অনেকে ব্যস্ততার জন্য সারা দিন সময় করে উঠতে পারেন না, তাঁরা রাতে ব্যায়াম করেন। এতে কোনো সমস্যা নেই।
যাঁরা সারা দিন বাসায় থাকেন, তাঁরা চাইলে যেকোনো সময় ব্যায়াম করতে পারেন।
ব্যায়ামের সময় অনেক বেশি খাবার খাওয়া ঠিক নয়। হালকা খাবার যেমন, একটা কলা বা বিস্কুট খেয়ে ব্যায়াম করলে উপকার পাওয়া যাবে।
সকালে ব্যায়াম করতে গিয়ে অনেকে ব্যায়াম শেষে ভরপেট খেয়ে বাসায় ফেরেন। এতে ব্যায়ামের কোনো উপকারিতা থাকে না।
যাঁরা নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তাঁরা বেশি দিনের অবসর কাটালে বা কোথাও ঘুরতে গেলে খাবারের দিকে নজর রাখা উচিত। ঘুরতে গিয়ে বেশি দিন থাকার পরিকল্পনা করলে সুযোগ থাকলে টুকটাক ব্যায়াম করা যেতে পারে।
পড়ুন ব্যায়াম করার সঠিক সময় নির্ধারণ
ব্যায়াম করার আগে বা পরপরই বেশি পরিমাণে পানি খাওয়া ঠিক নয়। ব্যায়ামের পর একটু বিশ্রাম নিয়ে তারপর পানি খেতে পারেন।
খাবারের মেন্যু থেকে যতটা সম্ভব মিষ্টি, কোমলপানীয়, ফাস্টফুড ইত্যাদি খাবার বাদ রাখাই ভালো। কারণ, এসব খাবার খেলে আপনার ব্যায়াম করা বৃথা হয়ে পড়বে।
নিজে অসুস্থ থাকলে ব্যায়াম করার দরকার নেই। বিশেষ করে গর্ভকালীন চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ব্যায়াম করা উচিত নয়।