অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যায় ভোগেন অনেকে। ফলে চুল পড়া রোধের নানা উপায়ের পাশাপাশি নতুন চু*ল গজানোর উপায়ও খোঁজেন ভুক্তভোগীরা। সত্যিই কি চু*ল পড়ে যাওয়ার পর নতুন করে আবার চুল গজাতে পারে? প্রাকৃতিক উপকরণ প্রয়োগ করে নিরাপদভাবে চু*ল গজানো কি সত্যিই সম্ভব? চলুন, জেনে নেওয়া যাক এসব প্রশ্নের উত্তর।
নতুন চুল গজাতে এগুলো ব্যবহার করলে কাজ হবে শতভাগ
চুল পড়ার জন্য অনেক কারণই দায়ী হতে পারে। কারও ক্ষেত্রে জিনগত কারণ থাকে। কারও আবার চুল পড়ে হরমোনের সমস্যার কারণে। আমিষ, কিছু ভিটামিন ও কিছু খনিজ লবণের ঘাটতি হলেও চুল পড়তে পারে। শারীরিক অসুস্থতা ও মানসিক চাপের সঙ্গেও সম্পর্ক আছে চুল পড়ার। যে কারণে চু*ল পড়ছে, তা নির্ণয় করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। তবে জিনগত কারণে চুল পড়লে আদতে কোনো সমাধান থাকে না। এ ছাড়া মনে রাখতে হবে, যে কারণেই চু*ল পড়ুক না কেন, যদি চুলের গোড়ার ফলিকলসহ চুল পড়ে যায়, তাহলে আর সে জায়গায় চু*ল গজাবে না। তবে নতুন চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা সম্ভব।
আরোও পড়ুন…
সৌন্দর্যচর্চায় প্রসাধনপণ্যে আস্থা বাড়াচ্ছে দেশি ব্র্যান্ড
সানস্ক্রিন ব্যবহারের এই দিকগুলো জানুন
ভিটামিন সি কি সব ধরনের ত্বকে মানায়
চুল গজানোর প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে সক্ষম, এমন পাঁচটি প্রাকৃতিক উপকরণ সম্পর্কে জানালেন হার্বস আয়ুর্বেদিক স্কিন কেয়ার ক্লিনিকের রূপবিশেষজ্ঞ আফরিন মৌসুমী।
মনে রাখতে হবে, এই পাঁচ উপকরণ প্রয়োগ করার সময় মাথার ত্বকে কোনো ময়লা বা তেল যেন না থাকে এবং মাথার ত্বক যেন থাকে শুষ্ক। শ্যাম্পু করার পর চুল ও মাথার ত্বক ভালোভাবে শুকিয়ে এরপর প্রয়োগ করতে হবে এসব উপকরণ। এসবের ব্যবহারবিধি এবং নতুন গজানো চুলের যত্ন সম্পর্কেও জেনে নিন এই রূপবিশেষজ্ঞের কাছ থেকে।
কেশরাজ বা কালোকেশী পাতা লবণপানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে নিন। এবার ব্লেন্ডারের সাহায্যে বা ছেঁচে রস করে নিন। রসটা মাথার ত্বকে লাগানোর পর তা ত্বকে শোষিত হওয়ার জন্য কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। এবার উষ্ণ নারকেল তেল মালিশ করুন মাথার ত্বকে। দেড়-দুই ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। প্রয়োজন অনুযায়ী কালোকেশী পাতা সপ্তাহে এক থেকে তিন দিন ব্যবহার করুন।
কচি বাঁশপাতা
কচি বাঁশপাতা চুল গজাতে দারুণ কাজে আসে। কিন্তু এটি ভীষণ ক্ষারীয় বলে ব্যবহারের সময় মাথার ত্বকে জ্বালা করা খুব স্বাভাবিক। আর চুল রুক্ষও হয়ে পড়ে। এই রুক্ষতা মোকাবিলায় আপনার প্রয়োজন হবে তিলের তেল। প্রথমে কচি বাঁশপাতা ধুয়ে তারপর শুকিয়ে মুছে নিন। রস করে মাথার ত্বকে লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন তা ত্বকের ভেতরে শোষিত হওয়ার জন্য। এরপর উষ্ণ তিলের তেল মালিশ করুন। দেড়-দুই ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করুন। সপ্তাহে এক-দুই দিন এভাবে কচি বাঁশপাতা ব্যবহার করুন।
আদা
খোসাসহ আদা রস করে নিন। মাথার ত্বকের ফাঁকা ফাঁকা স্থানে এই রস প্রয়োগ করুন। একবার প্রয়োগ করা হয়ে গেলে তা মাথার ত্বকে শোষিত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করুন। এভাবে মোট দু-তিনবার রস প্রয়োগ করতে হবে। সব শেষে শুকিয়ে গেলে ওই জায়গাগুলোতে তেল মালিশ করার পালা। এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হবে ক্যাস্টর অয়েল ও তিলের তেলের মিশ্রণ। তিলের তেল এক কাপ নিলে ক্যাস্টর অয়েল নিতে হবে দেড় কাপ। অর্থাৎ আপনার যে পরিমাণই প্রয়োজন হোক না কেন, এই অনুপাত বজায় রাখুন। এবার গরম পানিতে ভেজানো তোয়ালে নিংড়ে নিয়ে মাথায় জড়িয়ে রাখুন। মিনিট দশেক পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। সপ্তাহে চার দিন আদার রস প্রয়োগ করুন মাথার ত্বকে।
আরও পড়ুন
এই তিনভাবে চন্দন ব্যবহার করা যায়
আপেল নাকি ত্বকের উজ্জ্বলতা ফেরাবে! জানুন
বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষ দীর্ঘজীবনের রহস্য জানালেন
এক কাপ আমলকী, এক কাপ শিকাকাই আর আধা কাপ মেথি নিন। চার কাপ পানিতে মিশিয়ে এসব উপকরণ জ্বাল দিন মৃদু আঁচে। জ্বাল দেওয়ার জন্য স্টেইনলেস স্টিল বা লোহার কড়াই ব্যবহার করুন। পানি কমে ১০০ মিলিলিটারের মতো হয়ে এলে নামিয়ে নিন। ঠান্ডা হলে ছেঁকে মাথার ত্বকে প্রয়োগ করুন। এটি রাতে প্রয়োগ করা ভালো। চাইলে ১৫ দিনের জন্য বানিয়ে, ছেঁকে কাচের মুখবন্ধ বোতলে করে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। মাথার ত্বকে প্রয়োগ করার পর তা শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এরপর চুল আঁচড়ে নিন। সকালে তেল মালিশ করুন মাথার ত্বকে। খানিকক্ষণ পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। সপ্তাহে দু-তিন দিন ব্যবহার করুন এই মিশ্রণ।
রিঠা ও মেথি
দেড় কাপ পানিতে পাঁচ-ছয়টি রিঠা এবং এক কাপ মেথি ভিজিয়ে রাখুন সারা রাত। সকালে ছেঁকে ফেলুন। এই ফেনা ফেনা পানিই শ্যাম্পু হিসেবে ব্যবহার করলে চুল গজানোর সম্ভাবনা থাকে। তবে ব্যবহার করতে হবে প্রতিদিন।
জবা ফুল
তিন কাপ জবা ফুলের পাতা ধুয়ে নিন। ছয় কাপ পানি দিয়ে ব্লেন্ড করুন। ছেঁকে নিলেই হয়ে যাবে শ্যাম্পু। সদ্য গজানো চুলের যত্নে এই শ্যাম্পু দারুণ কার্যকর।