বিবাহিত একলা পথের নারী …
“বিয়ে পরবর্তী কোনো সম্পর্কে ঠিক যেতে পারি না আমি । সেটা করতে গিয়ে যদি কোনো শারীরিক দুর্বলতা আসে, আমি তাতে কমফর্টেবল নই।” পছন্দ হলো না আমার অনিকার এই কথাটা ।
জানতে চাইলাম সম্পর্কে না-জড়ানোর এটা কেমন যুক্তি? বিবাহিত একলা পথের নারী …
অনিকা মনের খাতা উজাড় করে দিল । অনিকা , এই শহরে নিজের ছেলেকে নিয়ে পথ হাঁটা এক একলা নারী ।
কী তকমায় ধরা যায় ওকে? বিবাহিত সিঙ্গেল পেরেন্টস ?
আসলে নিজের মতো করে বাঁচার অদম্য ইচ্ছা ওকে ওর স্বামী থেকে কিছুদিনের জন্যে আলাদা রেখেছে ।
এখন কেমন আছে অনিকা ?
“ছোটবেলা থেকেই ভীষণ মিশুকে আমি । গার্লস স্কুলে পড়ার জন্যেই ছেলেদের নিয়ে ভীষণ আগ্রহ ছিল আমার, এবং স্কুলে পড়তে পড়তেই বন্ধুর ভাইয়ের সঙ্গে একটা ছোট্ট প্রেম-প্রেম ভাব জমেছিল আমার ।
বেশ ভালো লাগত একজন ছেলের সঙ্গ, মানে যে আলাদা করে আমাকেই ভাবছে ।
বাংলা টিউশন নিতে একদম ভালো লাগত না ।
ওই ছেলে এই ব্যাপরে আমায় খুব হেল্প করেছিল, ওর সঙ্গে বেড়াতে যেতাম ওই টিউশন কাটিয়ে দিয়ে ।
মানে টিউশন না গিয়ে এমন কেয়ারিং কম্পানি আমার কাছে মজার ছিল ।
তবে ওটা কোনো গভীর প্রেম ছিল না। হাত ধরে হাঁটলেই কি প্রেম হয় নাকি?
ওই সময়ই আমার অমিতর সঙ্গে আলাপ, আমি জাস্ট পাগল হয়ে গিয়েছিলাম ।
অমিতর সব কিছুতেই আমি মুগ্ ধ। তখনই বুঝতে পারি, আগের ছেলেটা জাস্ট একটা ভালো সময় কাটানোর বন্ধু ছাড়া আমার কাছে আর কিছুই না ।
আমার বন্ধুরা সব্বাই জেনে গিয়েছিল অয়নের জন্যে আমি কতটা ইগার । কিন্তু অমিতকে কিছুই জানাইনি তখনও । নানান অনুষ্ঠানে কেবল দেখা আর কথা।
স্কুল, কলেজ হয়ে ইউনিভার্সিটিতে পা রাখলাম । তখনও শুধুই অমিত, আর কাউকেই মনে ধরত না । আসলে অমিতও বেশ খানিকটা সময় নিয়েছিল ।
অনেকটাই বড় ছিল ও আমার চেয়ে, তখন সদ্য ওর একটা সম্পর্ক ভেঙেছে ।
সেই কারণে ও অন্য কিছুতে বা আমার কাছে পৌঁছাতে খুব একটা সহজ বোধ করেনি ।
তবে হঠাৎ-ই একদিন চাকরি বদলে আমার কাছে হাজির হলো ।
কোনো পারিবারিক অনুষ্ঠানেও আমার জন্যে সকলের একই প্রশ্ন- ‘স্বামী কবে আসবে?’ বা ‘তুই কবে যাবি’?
বা ‘মেয়ে ওর বাবাকে তো খুব মিস করে? চিনতে পারবে পরে?’ মাঝে মাঝে বিরক্ত লাগে । এমন হয় যে নিজেকেও ছাদের অন্ধকারে, মেয়ের ঘুমের চাদরে আমি প্রশ্ন করি ‘আমি কি বাবা আর মেয়েকে আমার চাকরি, ভালোলাগার জন্যে আলাদা করছি’?
মা-ই আমায় সহজ করে রেখেছে । মায়ের মনের জোরে আমিও ভুলে যাই আমার একলা রাতের অন্ধকারের প্রশ্ন । অয়ন প্রায়-ই অফিসের কাজ নিয়ে চলে আসে ।
সত্যি বলতে কী, ওই আসায় যে শিহরণ জাগে বিয়ের এত বছর পর, অয়নের সঙ্গে থাকলে কি তা আসত? জানি না…
ওখানে কুট্টুসকে ফেলেও চাকরি করা সম্ভব ছিল না ।
আর আমার মনে হয়েছিল একলা বাড়ির অচেনা আয়ার চেয়ে, আমার মা, আমার বাড়ি অনেক বেশি নিশ্চিন্তের ।
অয়ন-ই বলল আমায় কলকাতা ফিরতে । আমি ভীষণ খুশি হয়েছিলাম । ঠিক করলাম মেয়েকে নিয়ে মার কাছে উঠব, আর চাকরিও জুটে গেল।
ফেলে আসা জায়গায় ফিরে যাওয়া, আমার শহরে আমি আর মেয়ে চলে এলাম ।
মোটা মাইনের চাকরি করা স্বামী থাকতেও কেবল নিজের চাকরির জন্যে বাবা আর বাচ্চাকে আলাদা করে, বিশেষ করে নিজের স্বামীকে অন্য জায়গায় ছেড়ে দিতে কেমন করে পারলাম? এই প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে ।
বিয়ে, বাচ্চা একের পর এক চলে এল আমার জীবনে।
সমস্যাটা হলো মেয়ে হওয়ার পর। আমরা তখন ঢাকা ছেড়ে চট্টগ্রামে ।
অয়ন ব্যস্ততায় মাসের বেশির ভাগটাই বাড়ির বাইরে। আমি পেরে উঠছিলাম না ।
আমার নিজের জীবন, চাকরি এসব ছেড়ে কেবল মেয়েকে নিয়ে দিন কাটাব, এমনটা আমি কোনোদিন-ই ভাবিনি ।
মেয়ে জন্মানোর পরের সময়টা যেমন খুব ভালো কাটিয়েছি আমি, কিন্তু তখনও জানতাম তিন মাসের মাথায় কাজ খুঁজতেই হবে আমায় ।
এই ভাবনাটা ছিল বলেই ভালো-লাগাটাও ছিল ।
নয়তো শুধুই ওকে নিয়ে কোনোদিন থাকতে চাইনি ।
আসলে বিয়ের পরেও বাচ্চা নিয়ে অন্য শহরে আলাদা থাকা নারীকে আজও নানান চোখে আমরা দেখি ।
আমার ননদ তো বলেই ফেলল একদিন ‘কী রে এখন তো তুমি পুরো ফ্রি! নতুন অনেক বন্ধু হলো না অফিসে? হুমম!’।
ভাইয়াও আওয়াজ দিতে ছাড়েনি ‘বিবাহিত একা ভাবীর এখন দারুণ বাজার, বুঝলি’?
আমি মজা করেই নিয়েছি এসব, আজও নিয়ে থাকি ।
কারণ অয়নের থেকে দূরে গিয়ে এত বেশি করে, এত শরীরী অয়নকে পাই যে, আলাদা থাকার মজা, আনন্দ বেড়েই চলে ।
নারীদের পর্ণ প্রীতি ….
আশাকরি আমাদের টিপসগুলো আপনাদের কাজে লাগবে।
যদি সমান্যতম কাজে লাগে তবে একটা ধন্যবাদ দিতে ভুলবেন না।
আর নিয়মিত টিপস পেতে আমাদের সাথে থাকুন।