উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ (সাধারণত উয়েফা ইউরোপীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ হিসাবে এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে ইউরো হিসেবে পরিচিত) হচ্ছে একটি প্রাথমিক ফুটবল প্রতিযোগিতা, যেখানে ইউরোপীয় ফুটবল এসোসিয়েশনের (উয়েফা) সদস্যপ্রাপ্ত পুরুষদের জাতীয় ফুটবল দলগুলো প্রতিযোগিতা করে।[১] এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী দল ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নের খেতাব অর্জন করে। এই প্রতিযোগিতাটি ১৯৬০ সাল থেকে প্রতি চার বছর অন্তর অন্তর বিশ্বকাপের মাঝে প্রতি জোড় বছরগুলোতে অনুষ্ঠিত হয়। এটি মূলত ইউরোপীয় নেশন্স কাপ নামে পরিচিত ছিল, অতঃপর ১৯৬৮ সালে বর্তমান নামে পরিবর্তন করা হয়েছে। ১৯৯৬ সালের আসর হতে পরবর্তী প্রায় সকল আসরে এই প্রতিযোগিতাটিকে উয়েফা ইউরো নামে উল্লেখ করা হয়; এই বিন্যাসটি তখন থেকে পূর্ববর্তী আসরগুলো প্রতিক্রিয়াশীলভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে।
এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের পূর্বে স্বাগতিক দেশ ব্যতীত (যারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে যোগ্যতা অর্জন করে) অন্য সকল দল বাছাইপর্বে অংশগ্রহণ করে। ২০১৬ পর্যন্ত এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী দল ফিফা কনফেডারেশন্স কাপে খেলার স্বয়ংক্রিয়ভাবে যোগ্যতা অর্জন করতো, তবে সেটি বাধ্যতামূলক ছিল না।[২]
এপর্যন্ত ১৫টি ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় সর্বমোট ১০টি জাতীয় দল শিরোপা জয়লাভ করেছে: স্পেন ৪টি শিরোপা জয়লাভ করেছে, জার্মানি ৩টি শিরোপা জয়লাভ করেছে, ফ্রান্স ও ইতালি ২টি করে এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন, চেকোস্লোভাকিয়া, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, গ্রিস এবং পর্তুগাল একটি করে শিরোপা জয়লাভ করেছে। আজ পর্যন্ত, স্পেন এই প্রতিযোগিতার ইতিহাসে একমাত্র দল হিসেবে যিনি টানা দুইবার শিরোপা জয়লাভ করেছে; স্পেন ২০০৮ সালে শিরোপা জয়লাভ করার পর পুনরায় ২০১২ সালে শিরোপা জয়লাভ করতে সক্ষম হয়েছিল। ফিফা বিশ্বকাপের পরে এটি বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনপ্রিয় ফুটবল প্রতিযোগিতা;[৩][৪] ২০১২ সালের ফাইনাল ম্যাচটি বিশ্বব্যাপী প্রায় তিন মিলিয়ন দর্শক দেখেছিল।[৫]
সর্বশেষ আসরটি ২০২৪ সালে জার্মানির এই আসরটি ২০২৪ সালের ১৪ই জুন হতে ১৪ই জুলাই পর্যন্ত জার্মানির ১০টি শহরের ১০টি মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই আসরের বিজয়ী দল পরবর্তীকালে ২০২৫ কনমেবল–উয়েফা কাপ অব চ্যাম্পিয়ন্সে ২০২৪ কোপা আমেরিকার বিজয়ী দলের মুখোমুখি হবে। এই আসরে অংশগ্রহণের মাধ্যমে জর্জিয়া উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত পর্বে অভিষেক হবে। ১৪ই জুলাই ২০২৪ বার্লিনের অলিম্পিয়া স্টেডিয়ামে আয়োজিত ফাইনাল ম্যাচে স্পেন ইংল্যান্ডকে ২–১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে এই প্রতিযোগিতার ইতিহাসে চতুর্থবারের মতো শিরোপা জয়লাভ করেছে।