Sunday , 27 October 2024

মন খারাপ থাকলে শারীরিক অসুস্থতা কি বাড়ে

মন খারাপ থাকলে শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয়। জীবনসঙ্গীর মৃত্যুর অল্প কিছুদিনের মধ্যে কেউ যদি মারা যান কিংবা শারীরিকভাবে ভেঙে পড়েন, তখন অনেকেই ধারণা করেন, প্রিয় মানুষের মৃত্যুর শোক সামলাতে না পারার কারণেই এমনটা ঘটেছে। আদতেই কি শোকের সঙ্গে শারীরিক অবস্থার যোগসূত্র থাকে? এমন ঘটনার কি কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে?

মন
মন খারাপ থাকলে শারীরিক অসুস্থতা কি বাড়ে

মন খারাপ থাকলে শারীরিক অসুস্থতা কি বাড়ে

 

কথায় বলে, সুস্থ দেহে সুস্থ মনের বাস। দেহ সুস্থ না থাকলে মন ভালো থাকে না। আবার মন ভালো না থাকলেও কিছু শারীরিক সমস্যা বাড়তে পারে। দেহ আর মনের এই আন্তঃসম্পর্কের ব্যাখ্যা দিলেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের শিশু-কিশোর ও পারিবারিক মনোরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. হেলালউদ্দীন আহমেদ।

ডায়াবেটিসের কম–বেশিতে

যেকোনো মানসিক বিপর্যয়ের কারণেই দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক রোগনিয়ন্ত্রণে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। ধরা যাক, একজনের ডায়াবেটিস আছে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য তাঁকে একটি নির্দিষ্ট ধারায় জীবনযাপন করতে হয়। খাওয়াদাওয়া, শরীরচর্চা, ওষুধ সেবন—সব ঠিক থাকলে তবেই সুস্থ থাকেন তিনি। মাঝেমধ্যে রক্তের সুগার মেপেও দেখতে হয় বৈকি। তিনি যদি কোনো কারণে মানসিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হন, তাহলে তাঁর এই সুনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা ব্যাহত হতে পারে।

ক্ষুধা লাগলে মেজাজ কেন খিটখিটে থাকে

মাতৃত্বকালীন ছুটির পর কাজে ফেরা

পোষা প্রাণী রাখার সুবিধা

তিনি হয়তো তখন সময়মতো খাওয়াদাওয়া করলেন না বা এমন কিছু খেয়ে ফেললেন, যা তাঁর জন্য ক্ষতিকর; নিয়মমাফিক ওষুধ সেবন করলেন না কিংবা দস্তুরমতো শরীরচর্চা করতে পারলেন না। এ রকম হলে তাঁর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। সময়মতো খাবার না খেলে রক্তের সুগারের মাত্রা ভয়াবহ পর্যায়ে নেমেও যেতে পারে।

নানান রোগের জটিলতা

ডায়াবেটিসের মতোই প্রায় একই ধরনের ব্যাপার ঘটে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্‌রোগ, হাঁপানি, দীর্ঘমেয়াদি কিডনির রোগসহ অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে। যেসব রোগকে স্বাস্থ্যকর জীবনধারার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়, সে রকম যেকোনো রোগ থাকলেই মানসিক বিপর্যয়ের সময়টাতে জটিলতা বাড়তে পারে।

মানসিকভাবে ভালো না থাকার কারণে ঘুমের সমস্যা হতে পারে। বাড়তে পারে মানসিক চাপের সঙ্গে সম্পর্কিত হরমোনের মাত্রা, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে শরীরের ওপর। অর্থাৎ মন ভালো না থাকলে নানান কারণেই শারীরিক অসুস্থতা বাড়ার ঝুঁকি থাকে।

কারও প্রিয়জনের মৃত্যু হলে কিংবা অন্য কারণে কেউ মারাত্মক কোনো মানসিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হলে তাঁর পরিচিতজনদের দায়িত্ব বেড়ে যায়। কেবল প্রথম কয়েকটা দিন তাঁর জন্য খাবার পাঠানো কিংবা তাঁর কাছে থাকাই যথেষ্ট নয়। অন্ততপক্ষে তিনি মোটামুটি স্বাভাবিক অবস্থায় না ফেরা পর্যন্ত তাঁর শরীর ও মনের প্রতি বিশেষভাবে যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন। তিনি যদি আগে থেকে কোনো রোগে আক্রান্ত থাকেন, সেই রোগের চিকিৎসার যাতে ব্যত্যয় না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

যেসব রোগের চিকিৎসায় জীবনধারাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়, সে রকম কোনো রোগ থাকলে স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখার বিষয়ে সহযোগিতা করতে হবে। এমনকি আগে থেকে কোনো ধরনের রোগ না থাকলেও খেয়াল রাখতে হবে তাঁর মনের। অস্বাভাবিক দুঃখবোধ বিষণ্নতার একটি উপসর্গ। এটাও ঠিক যে কিছু শোক কখনোই পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয় না। তবু শোক সামলে একসময় স্বাভাবিক ছন্দে জীবনকে এগিয়ে নিতে হয়। সময় গড়ালেও সেই স্বাভাবিকতার দিকে যদি কোনো ব্যক্তি ফিরতে না পারেন, তাহলে তাঁর একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শেরও প্রয়োজন হতে পারে।

ফেসবুক পেজ

আপনাদের কোর প্রকার অভিযোগ থাকলে Contact Us মেনুতে আপনার অভিযোগ জানাতে পারেন,

আমরা আপনাদের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব।

Spread the love

Check Also

চুলকানি

চুলকানি ঘরোয়াভাবে দূরীকরণের উপায়

চুলকানি খুবই অস্বস্তিকর। প্রাথমিকভাবে না চুলকানো পর্যন্ত এর থেকে রেহাই মেলে না। চামড়ার বাইরের স্তর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *