Sunday , 27 October 2024

মানুষটি ভুল কিন্তু কেন মনে করে সে–ই সঠিক

মানুষটি ভুল তবুও দাবি করে সে সঠিক। একটু কষ্ট করে দুজন কল্পনা করে নিন। প্রথমজনের কাছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো যথেষ্ট, তথ্য–উপাত্ত আছে। কিন্তু সে দ্বিধাগ্রস্ত, সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। আরেকজনের কাছে যথেষ্ট তথ্য–উপাত্ত না থাকার পরও সে নিশ্চিন্তে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে। অনেক সময় তো এরকম হয়। কেন হয়? এখানে যে ‘ফ্যাক্টর’টি কাজ করে, তা হলো আত্মবিশ্বাস। প্রথম ব্যক্তির সেটা নেই। দ্বিতীয় ব্যক্তির তা আছে বৈকি, একটু বেশিই আছে।

মানুষটি ভুল
মানুষটি ভুল কিন্তু কেন মনে করে সে–ই সঠিক

মানুষটি ভুল কিন্তু কেন মনে করে সে–ই সঠিক

 

আপনি বুঝতে পারছেন যে সামনের লোকটি ভুল করেছে বা ভুল বলছে। কিন্তু সে নিজে কিছুতেই বুঝতে পারছে না। বিষয়টি আপনার জন্য কিঞ্চিৎ হতাশার। মানুষ কেন এ রকম করে?

সম্প্রতি প্লস ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় মিলেছে এই প্রশ্নের উত্তর। গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক। সেখানে উঠে এসেছে, ভুল করেও নিজেকে সঠিক ভাবার পেছনের মনস্তাত্ত্বিক কারণ। কী সেই কারণ? চলুন জেনে নেওয়া যাক।

ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক, এই গবেষণার অন্যতম সহলেখক অ্যাঙ্গুস ফ্লেচার জানান, নিজেকে সব সময় সঠিক ভাবার পেছনে প্রধান কারণ হলো অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস। যখন একজন মানুষ অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী থাকে, কেবল তখনই সে খুব কম তথ্যের ওপর ভিত্তি করে অল্প সময়ে সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সিদ্ধান্ত ভুল হবার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। কিন্তু সে ভাবে, সে আসলে ভুল করেনি।

মা-মেয়ের বন্ধুত্ব সম্পর্কে নারীত্বের বন্ধন

বিপদ যখন আসে কী করবেন তখন

মাইগ্রেন! ভুলেও এই ৫ ভুল নয়

গবেষণাটি কীভাবে হলো

১ হাজার ৩০০ জনের ওপর গবেষণাটি পরিচালিত হয়। তাঁদের গড় বয়স ৪০ বছর। তাঁদের সবাইকে একটা কাল্পনিক গল্প দেওয়া হয়।

প্রথম ৫০০ জনকে গল্পটার সঙ্গে চারটা যুক্তি দেওয়া হয়। এই গল্পটা যে সত্যি, তার পক্ষে তিনটা যুক্তি দেওয়া হয়। আরেকটা ‘নিরপেক্ষ’ যুক্তি দেওয়া হয়। যার মানে, গল্পটা সত্যি হতেও পারে। আবার না–ও পারে।

পরের ৫০০ জনকেও চারটা তথ্য দেওয়া হয়। এই গল্পটা যে সত্যি নয় (বা মিথ্যা), তার পক্ষে তিনটা যুক্তি দেওয়া হয়। আর চতুর্থ আরেকটা যুক্তি দেওয়া হয়, যেটা নিরপেক্ষ। মানে, গল্পটা মিথ্যা হতেও পারে। আবার না–ও পারে।

বাকি ৩০০ জনকে সব (সাতটা) যুক্তি দেওয়া হয়। তিনটা যুক্তি গল্পটার পক্ষে। তিনটা যুক্তি গল্পটার বিপক্ষে। আর একটা নিরপেক্ষ।

এরপর এই ১ হাজার ৩০০ জনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, গল্পটা সত্যি নাকি মিথ্যা।

প্রথম ৫০০ জনের বেশির ভাগই বলেছেন গল্পটা সত্য। দ্বিতীয় ৫০০ জনের বেশির ভাগই বলেছেন গল্পটা মিথ্যা। আর এই ১ হাজার জনের প্রায় সবাই তাঁদের উত্তরের সঠিকতার বিষয়ে অধিক আত্মবিশ্বাসী ছিলেন।

সর্বশেষ ৩০০ জনের ভেতর যাঁরা ৭টি যুক্তি ভালোভাবে পড়েছেন, সময় নিয়ে উত্তর দিয়েছে—তাঁদের ভেতরেই সঠিক উত্তর দেওয়া প্রতিযোগীদের সংখ্যা বেশি। অথচ, তাঁর নিজেদের উত্তরের বিষয়ে বেশি আত্মবিশ্বাস দেখাননি।

ফলাফল

এখান থেকে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হয় যে অল্প তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়া ব্যক্তিরা তাঁদের সিদ্ধান্তের বিষয়ে নিজেদের বেশি আত্মবিশ্বাসী মনে করেন। আর অল্প বা একপক্ষীয়ভাবে বিষয়টি পর্যালোচনা করায় সেই সিদ্ধান্ত ভুল হবার সম্ভাবনা থাকে বেশি।

অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের কারণেই অনেকে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজেদের সঠিক মনে করেন।

তবে ঢালাওভাবে এই মন্তব্য করা যাবে না। অনেকের নানা কারণে অল্প সময়ে, কম তথ্য বিশ্লেষণ করেও সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতা থাকতে পারে। আবার অনেকে অনেক তথ্য–উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নেন।

ফেসবুক পেজ

আপনাদের কোর প্রকার অভিযোগ থাকলে Contact Us মেনুতে আপনার অভিযোগ জানাতে পারেন,

আমরা আপনাদের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব।

Spread the love

Check Also

কাজে মনোযোগ

১০ টি টিপস কাজে মনোযোগ বাড়ানোর

কাজে মনোযোগ ধরে রাখাটা জরুরি দৈনন্দিন জীবনে । তীব্র প্রতিযোগিতার এই যুগে জরুরি কোনো কাজে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *