একটি আইফোন মডেল রিলিজ হবার পরে আরেকটি i-Phone মডেল রিলিজ হবার আগ পর্যন্ত সকল টেক লাভারদের মধ্যে একটা এক্সাইটমেন্ট কাজ করে ।আর তারই ধারাবাহিকতায় i-Phone রিলিজ করেছে একটি নতুন ডিভাইস আইফোন ১৬। যেটা নিয়ে টেক লাভারদের মনের ভিতর অস্থিরতা কাজ করছে । চলুন দেখে নেই এবার নতুন আইফোনে কি কি ফিচার থাকছে ।
ফিচার সমূহ:
*ডিজাইন ও বিল্ড কোয়ালিটি
*ডিসপ্লে
*ক্যামেরা
*পারফরম্যান্স
*সফটওয়ার
*ব্যাটারি
*অন্যান্য ফিচার
iPhone 16: ডিজাইন ও বিল্ড কোয়ালিটি:
সর্বপ্রথম যে বিষয়টা আলোচনা করব সেটা হচ্ছে এই ডিভাইসটির ডিজাইন এবং বিল্ড কোয়ালিটি নিয়ে।I-phone ১৬ এর সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হলো এর ডিজাইনে, এই ডিভাইসটার শেইপ একদম ফ্ল্যাট,যার ব্যাকসাইডে থাকছে অ্যালুমিনিয়াম ফ্রেম এবং নতুন পিল শেইপের ক্যামেরা মডিউল।
এই ডিভাইসটির লেফট (বাম) সাইডে থাকছে অ্যাকশন বাটন ও ভলিউম আপ/ডাউন।
রাইট সাইডে থাকছে নতুন ক্যামেরা কন্ট্রোল বাটন এবং পাওয়ার বাটন । এছাড়া এই ডিভাইটার নিচের দিকে থাকছে এর ইউএসবি টাইপ সি ,স্পিকার এবং মাইক্রোফোন ।
নতুন ক্যামেরা কন্ট্রোল বাটন দিয়ে Exposure , zoom , styles , Camera , Tone কন্ট্রোল করা যায় ।
অ্যাকশন বাটনটি দিয়ে silent mood , focus , Camera , voice memo ,Flashlight , Translate , Magnifier , controls , Recognize music , Shortcut এবং Accessibility এর মত কাজগুলো সহজে করা যাবে ।
ডিভাইসটির ওজন ১৭০ গ্রাম যার জন্য এটি অনেক বেশি লাইটওয়েট। এর আইপি ৬৮ ওয়াটার/ডাস্ট রেসিস্ট্যান্ট হওয়ায় পানির ৬ মিটার নিচে ৩০ মিনিট পর্যন্ত থাকবে নিরাপদে।তাই বৃষ্টি কিংবা সুইমিংপুলে নির্দ্বিধায় ব্যবহার করতে পারবেন
iPhone 16: ডিসপ্লে:
এই ডিভাইসটিতে রয়েছে ৬.৩ ইঞ্চির সুপার রেটিনা এক্সডিআর ও এলইডি ডিসপ্লে। যেটি ৬০ হার্জের একটি ডিসপ্লে যার সর্বোচ্চ ব্রাইটনেস ২০০০ নিটস।ডিসপ্লেটি এমন ব্রাইট হওয়াতে আপনি বাইরে কিংবা সরাসরি সূর্যের নীচেও খুব সহজে ব্যবহার করতে পারবেন।
অ্যাপেল তার ডিসপ্লের সুরক্ষার জন্য এতে নতুন সিরামিক শিল্ড গ্লাস প্রোটেকশন (২০২৪ জেন) ব্যবহার করেছে, যা ধুলাবালি বা যে কোনো কঠিন স্ক্র্যাচ থেকে সহজেই আপনার ডিভাইসটিকে রক্ষা করবে।
ডায়নামিক আইল্যান্ডের ডিসপ্লে স্ক্রিন-টু-বডি রেশিও ৮৬.৪%, যার ফলে এর ব্যাজেলটি ছিলো বেশ সরু। ১৯.৫:৯ অনুপাতের ডিসপ্লেটির রেজুলেশন ১১৭৯ x ২৫৫৬ পিক্সেল এবং পিপিআই ডেনসিটি ৪৬১, ফলে এটি অনেকটাই স্পষ্ট এবং রঙিন।
iPhone 16: ক্যামেরা:
এটি একটি ১২ মেগাপিক্সেল আলট্রাওয়াইড ক্যামেরা, যার অ্যাপারচার সাইজ f/2.2 এবং এটি ১২০˚ পর্যন্ত ওয়াইড শট নেয়ার সক্ষমতা রাখে। এর মাধ্যমে আপনি এক ফ্রেমে অনেক বেশি জায়গা অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন। গ্রুপ ফটো কিংবা ল্যান্ডস্কেপ শট তুলতে এই ক্যামেরা অত্যন্ত কার্যকর।
ডিভাইসটির সেলফি ক্যামেরা ১২ মেগাপিক্সেল সেন্সর এবং f/1.9 অ্যাপারচার সাইজ সহ, যা দিয়ে আপনি উচ্চ মানের ছবি পাবেন। এই ক্যামেরা দিয়ে সহজেই বড় এবং ওয়াইড সেলফি তোলা সম্ভব।
পিছনের ও সেলফি ক্যামেরাগুলি উভয়েই ৪কে রেজুলেশন এবং ৬০ ফ্রেম প্রতি সেকেন্ডে ভিডিও শুটিংয়ের সুবিধা দেয়। রেয়ার এবং ফ্রন্ট ক্যামেরায় আইএস এবং জাইরো-ইআইএস প্রযুক্তি রয়েছে, ফলে ভিডিও রেকর্ডিং হবে অত্যন্ত স্ট্যাবল।
এবারের আইফোনে একটি ডেডিকেটেড ক্যামেরা কন্ট্রোল বাটন রয়েছে, যার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই প্রফেশনাল ফটোগ্রাফি করতে পারবেন। এক্সপোজার, ডেপথ, জুম, ক্যামেরা সুইচ, টোন কন্ট্রোল এবং লং প্রেস করে ভিডিও রেকর্ডিং করা যাবে। এই বাটনটির মাধ্যমে আপনি দ্রুত সময়ে ক্যামেরা অ্যাক্সেস করতে পারবেন।
iPhone 16: পারফরম্যান্স:
এই লেটেস্ট আইফোন ১৬-এ প্রথমবারের মতো ব্যবহৃত হয়েছে নতুন A18 চিপ, যা একটি হেক্সা কোর প্রসেসর। যাতে রয়েছে ৬টি সিপিইউ কোর, এর মধ্যে ২টি পারফরম্যান্স কোর এবং ৪টি এফিশিয়েন্স কোর।এই চিপসেটে গ্রাফিক্স সাপোর্ট হিসেবে ৫ কোরের অ্যাপেল জিপিইউ এবং এআই ব্যবস্থাপনার জন্য ১৬ কোরের নিউরাল ইঞ্জিন রয়েছে।
এই শক্তিশালী প্রসেসরটির মাধ্যমে আপনি দৈনন্দিন কাজগুলো নিখুঁতভাবে করতে পারবেন, পাশাপাশি মাল্টিটাস্কিং এবং আপনার পছন্দের গেমগুলোও অত্যন্ত স্মুথলি খেলতে পারবেন।
এই ডিভাইসটি চলবে অ্যাপেলের নতুন iOS ১৮ অপারেটিং সিস্টেমে, যা A18 চিপের সঙ্গে একত্রে দারুণ পারফরম্যান্স প্রদান করবে। নতুন এই অপারেটিং সিস্টেমে বেশ কিছু আকর্ষণীয় ফিচার যোগ করা হয়েছে, যা আইফোন ১৬ এর অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত করবে।
iPhone 16: সফটওয়ার:
আইফোন ১৬ সিরিজের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে এই অপারেটিং সিস্টেমটি। নতুন iOS-এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো AI Powered Apple Intelligence, যা আইফোন ১৬-এর অডিও, ভিডিও, ক্যামেরা, পারফরম্যান্স এবং গেমিং সবকিছুকে আরও উন্নত করেছে।
আইফোন ১৬: নতুন সফটওয়্যার iOS ১৮ এই AI প্রযুক্তি ফোনের বিভিন্ন সেন্সর এবং ডেটা ব্যবহার করে ব্যবহারকারীর পছন্দ ও প্রয়োজন বুঝতে পারে। এর ফলে ফোনটি ব্যবহারকারীর চাহিদা অনুযায়ী নিজেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যাডজাস্ট করে। AI ক্যামেরা সেটিংসও স্বয়ংক্রিয়ভাবে এমনভাবে পরিবর্তন করে, যাতে আপনি সবসময় সেরা ছবি তুলতে পারেন। এছাড়াও ফোনের বিভিন্ন অ্যাপ এবং প্রসেস অপটিমাইজ করে, ফলে ফোনটি আরও দ্রুত এবং স্মুথলি কাজ করে। গেমিং অভিজ্ঞতাও হয়ে ওঠে আরও ইমারসিভ এবং রিয়েলিস্টিক।
iPhone 16: ব্যাটারি:
এবারের আইফোন ১৬-এর ব্যাটারি ক্যাপাসিটি সম্পর্কে এখনো কোনো নির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশিত হয়নি, তবে এটা স্পষ্ট যে, গতবারের তুলনায় এবারের আইফোনের ব্যাটারি হবে আরও বড়। চার্জিংয়ের ক্ষেত্রে ওয়াটের পরিমাণ এখনও জানা যায়নি, তবে এটুকু নিশ্চিত যে, আইফোনটি ২৫ ওয়াটের ম্যাগসেফ ওয়ারলেস চার্জিং সমর্থন করবে এবং ১৫ ওয়াট ওয়্যারলেস চার্জিংও সম্ভব হবে।
iPhone 16: অন্যান্য ফিচার:
এবারের আইফোনে অন্যান্য ফিচার হিসেবে ই-সিম সুবিধা, স্যাটেলাইট কানেকটিভিটি সাপোর্ট এবং ইমার্জেন্সি এসওএস মেসেজিংও পাওয়া যাবে।