রূপচর্চায় বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপণে বিভিন্ন ফুলের ব্যবহার দেখা যায়। সবচেয়ে বেশি দেখা যায় গোলাপ ও জবা ফুল। এর কারণ হলো, জবা ও গোলাপ ফুলে আছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, খনিজ ও ভিটামিন। যা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।
রূপচর্চায় জবা ও গোলাপ ফুলের ব্যবহার
তাহলে রূপচর্চায় গোলাপ ও জবা ফুলের ঘরোয়া ব্যবহার জেনে নিলে কেমন হয়?
আজকের প্রতিবেদনে তেমনি কিছু টিপস দেওয়া হবে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
রুপচর্চায় গোলাপের পাপড়ি:
গোলাপ জল, ফেস মাস্ক, গাঁয়ে মাখার সাবান, লোশন, নাইট ক্রিম ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহৃত হয় গোলাপ। গোলাপের অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ত্বকে বয়সের বলিরেখা পড়তে দেয় না।
ত্বকে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে। তাই আপনিও আপনার ত্বককে প্রাণবন্ত রাখতে ব্যবহার করতে পারেন গোলাপ পাপড়ি। বাড়িতেই গোলাপের পাপড়ি দিয়ে বিভিন্ন প্যাক বানিয়ে নিতে পারেন।
১. ত্বকের কোমলতা বাড়াতে:
শুকনো গোলাপের পাপড়ির সঙ্গে ২ টেবিল চামচ মধু ও ২ টেবিল চামচ তরল দুধ এক সঙ্গে পেষ্ট তৈরি করে নিন।
রাতে ঘুমানোর পূর্বে মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। অতঃপর ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে আপনার ত্বক হবে নরম ও কোমল।
২. ঠোটের যত্নে:
রূপচর্চায় ঠোটের কালো দাগ দূর করতে লেবু, লাল চিনি, দুধ ও গোলাপের পাপড়ি একসঙ্গে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে নিতে পারেন।
লেবুর রস ৩-৪ ফোটা, লাল চিনি কয়েক দানা, তরল দুধ ও গোলাপের পাপড়ির পেষ্ট তৈরি করে নিন। সব উপকরণ এক সঙ্গে মিশিয়ে ঠোটে লাগিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। তারপর ধুয়ে ফেলুন।
৩. ব্রণ দূর করতে:
যারা ব্রণের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য গোলাপ পাপড়ি ও লেবুর রস হতে পারে প্রাকৃতিক সমাধান। লেবুর রস কয়েক ফোটা ও সঙ্গে গোলাপের পাপড়ি পেষ্ট। এক সঙ্গে মিশিয়ে ব্রণের স্থানে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এ পদ্ধতি ব্রণের সমস্যা দ্রুত দূর করতে সাহায্য করে।
৪. সানস্ক্রিন হিসেবে:
রোদে বাহিরে বের হওয়া আগে এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন। গোলাপের পাপড়ির রস, এলোভেরা জেল, শসার রস ও আমন্ড অয়েল এক সঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন। আপনার ত্বককে রোদে পুড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন হিসেবে কাজ করবে।
৫. ডার্ক সার্কেল দূর করতে:
গোলাপের পাপড়ি চোখের নিচে কালো দাগ দূর করতে দূত কাজ করে। একটি পাত্রে কিছু গোলাপের পাপড়ি পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর তুলার সাহায্যে গোলাপের পাপড়ি ভিজানো পানি চোখে লাগিয়ে রাখুন ১৫-২০ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন। এটি নিয়মিত ব্যবহার করলে ডার্ক সার্কেল দূর হবে।
৬. হাতের যত্নে:
গোলাপের পাপড়ি পেষ্ট তৈরি করে তার সঙ্গে ২ চা চামচ চালের গুড়া ও ২ চা চামচ অলিভ ওয়েল এক সঙ্গে মিশিয়ে হাতে লাগিয়ে রাখুন । ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে হাত দুয়ে ফেলুন। এটি হাতের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
৭. চুলের যত্ন:
গোলাপের পাপড়ি চুলের পুষ্টি যোগাতে অনেক সাহায্য করে। ২ টেবিল চামচ গোলাপের পাপড়ির পেষ্টের সঙ্গে পেয়াজের রস মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে নিন। এটি সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহার করবেন। এতে চুল পড়া বন্ধ হবে। আবার মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল সচল করবে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে।
৮. ময়েশ্চারাইজার হিসেবে:
ত্বকের ময়েশ্চার ধরে রাখতে গোলাপের তুলনা হয় না। ১ চামচ গোলাপের রস ও ২ চামচ এলোভেরা জেল এক সঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগাবেন। এটি ত্বকে ময়েশ্চারাইজারের কাজ করে রূপচর্চায়।
রুপচর্চায় জবা ফুল:
সৌন্দর্য ধরে রাখতে জবা ফুল অতুলনীয়। ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে ও ত্বকের সঠিক রং বজায় রাখতে এর জুড়ি মেলা ভার। ত্বকের প্রয়োজনীয় তেলের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রেখে ত্বককে বুড়িয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে জবা ফুলের রস ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও জবার রস মাথার ত্বকের যত্ন নেয় এবং চুলের বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে। এ সকল কারনেই চুলের তেল তৈরিতে এবং বিভিন্ন সৌন্দর্য বর্ধনকারী পণ্যে জবা ফুল ব্যবহার করা হয় রূপচর্চায়।
১. ব্রণ দূর করতে:
জবা ফুল শুকিয়ে পাউডার তৈরী করে নিন। জবা ফুলের পাউডারের সাথে ১ চামচ মধু, মুলতানি মাটি ও পানি এক সঙ্গে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে নিন। মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিন তারপর প্যাকটি মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। ২০ মিনিট অপেক্ষার পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। জবা ফুলের ফেসপ্যাক সপ্তাহে ৩-৪দিন ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে ব্রণ, র্যাশ দূর হবে এবং ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করবে।
২. টক্সিন ও অতিরিক্ত তেল কমায়:
জবা ফুলের পাপড়ির পেষ্ট তৈরি করে তার সঙ্গে এলোভেরা জেল মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট ম্যাসাজ করুন। ত্বকের দূষণ কমাবে ও অতিরিক্ত তেল দূর করবে।
৩. ত্বকের বলি রেখা দূর করতে:
শুকনো জবা ফুলের পাপড়ি গুড়া ৩ চামচ, ৪ টেবিল চামচ টক দই, ১ চামচ চন্দন গুড়া একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এটি মুখের বলি রেখা দূর করতে সাহায্য করবে।
৪. চুলের যত্নে:
খুশকি কমাতে জবা ফুল দারুণ কার্যকারী। প্রথমে ২-৩ চামচ মেথি পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর জবা ফুলের পেষ্ট ৩ চামচ, এলোভেরা জেল, অলিভ অয়েল তেল মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে নিন। মিশ্রণটি ভালোভালে মাথায় লাগিয়ে ফেলুন। শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
এভাবে সপ্তাহে ৩-৪দিন ব্যবহার করবেন। অথবা জবা ফুলের পেষ্টের সঙ্গে মেহেদি মিশ্রণ করে তাতে লেবুর রস দিয়ে দিন। এরপর ভালোভাবে মাথায় লাগিয়ে নিন। ৩০ মিনিট অপেক্ষার পর ধুয়ে ফেলুন। এতে করে চুল পড়া বন্ধ হবে ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে রূপচর্চায়।
সূত্র : স্বাস্থ্যবিধি
অ্যালার্জি ঘরোয়াভাবে যেভাবে দূর করবেন
বিচ্ছেদ ‘বার্ষিকী’ পালন করছেন পরীমনি
বউ-শাশুড়ির মধুর সম্পর্ক করবেন যে উপায়ে
এরপরও আপনাদের কোর প্রকার অভিযোগ থাকলে Contact Us মেনুতে আপনার অভিযোগ জানাতে পারেন,
আমরা আপনাদের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব।