Friday , 18 October 2024

মুমিন কেন বিপদে ভেঙে পড়ে না

দুঃখ-কষ্ট ও বিপদ-আপদ মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সাধারণত মানুষ দুঃখ-কষ্টে ভেঙে পড়ে এবং মনোবল হারিয়ে ফেলে। কিন্তু প্রকৃত মুমিন এর ব্যতিক্রম। বিপদের ভারে কখনো নুয়ে পড়ে না; বরং আল্লাহর ওপর ভরসা করে সোজা হয়ে দাঁড়ায়, ধৈর্যের সঙ্গে আপন পথে চলতে থাকে।

 

মুমিন
মুমিন কেন বিপদে ভেঙে পড়ে না

 

 

মুমিন কেন বিপদে ভেঙে পড়ে না

 

অন্যদিকে আল্লাহতে অবিশ্বাসীরা বিপদের সঙ্গে যুদ্ধ করে লড়তে থাকে। আল্লাহর ওপর বিশ্বাস রেখে দাঁড়ানোর বিন্দুমাত্র চেষ্টা করে না। একসময় তারা সমূলে ধ্বংস হয়ে যায়। আমাদের প্রিয় নবী (সা.) মুমিন ও কাফিরের বিপদ-আপদ ও দুঃখের মুহূর্তগুলোকে একটি চমৎকার উপমায় উপস্থাপন করেছেন।

সহিহ বুখারির বর্ণনায় সাহাবি কাআব (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, মুমিন ব্যক্তির উদাহরণ হলো শস্যক্ষেতের নরম চারাগাছের মতো, যাকে বাতাস একবার কাত করে ফেলে, আরেকবার সোজা করে দেয়। আর মুনাফিকের দৃষ্টান্ত, ভূমির ওপর শক্তভাবে স্থাপিত বৃক্ষ, যাকে কিছুতেই নোয়ানো যায় না। শেষে এক ঝটকায় মূলসহ তা উপড়ে যায়। (বুখারি : ৫৬৪৩)
উপরোক্ত হাদিসের উপমার ব্যাখায় ইমাম মুহাল্লাব (রহ.) বলেন, এ হাদিসের ব্যাখ্যা হলো, মুমিন যখনই আল্লাহর নির্ধারিত কোনো ফায়সালার মুখোমুখি হয়, তখনই আল্লাহর আনুগত্য করে।

অনুকূল পরিস্থিতিতে খুশি হয় এবং আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে। আর প্রতিকূল মুহূর্তে ধৈর্যধারণ করে এবং এ ক্ষেত্রেও সওয়াব ও কল্যাণের আশা রাখে। অতঃপর বিপদ কেটে গেলে আবার শোকরগুজার হয়। অন্যদিকে কাফিরের ক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলার কোনো আগ্রহ নেই; বরং তার দুনিয়ার পথচলা সহজ করে দেন, যাতে চিরস্থায়ী জীবনের সফর কঠিন হয়। অতঃপর যখন আল্লাহ তাকে ধ্বংস করার ইচ্ছা করেন, তখন শক্ত হাতে পাকড়াও করেন।

বৃষ্টিতে স্নিকার্স সুরক্ষিত রাখবেন যেভাবে

ছেলেদের হেয়ার স্টাইল দেখেই বুঝে নিন তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য

আপনার ফোনে কি চার্জ ১০০ থেকে সোজা ৩০-৪০ শতাংশে নেমে যাচ্ছে

ফলে তার মৃত্যু হয় অত্যধিক কষ্টদায়ক এবং রুহ বের হয় অধিক যন্ত্রণায়। অন্যান্য হাদিসবিশারদরা বলেন, এর অর্থ হলো দুনিয়ায় মুমিনের অংশ কম থাকার কারণে সে বিভিন্ন ধরনের বালা-মুসিবতের সম্মুখীন হয়। সে হলো ওই শস্যক্ষেত্রের ওই চারাগাছের ন্যায় যে সামান্য স্পর্শেই নড়ে ওঠে; তবে কাফিরের অবস্থা এর বিপরীত। (ফাতহুল বারি : ১০/১২২)

আল্লামা তিবি (রহ.) বলেন, ‘ওই হাদিসের উপমা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো মুমিনের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা। কারণ মুমিনের বৈশিষ্ট্য হলো সে দুনিয়ায় অভাব-অনটনে থাকবে। তার আশা-আকাঙ্ক্ষা সহজে পূর্ণ হবে না। সর্বদা নিজেকে সবরের জন্য প্রস্তুত রাখবে। ফলে এর বিনিময়ে সে আখিরাতে চিরস্থায়ী জান্নাতের অপার নিয়ামত ও সুখ-শান্তি উপভোগ করবে। আর হাদিসে নরম চারাগাছের বিপরীতে পাইনগাছ ও বিশালাকার মজবুত গাছের উৎপাটনের উপমা ব্যবহার করে মূলত এর দ্বারা কাফিরদের ভয়াবহ জীবনাবসানের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।’ (তুহফাতুল আহওয়াজি : ৮/১৩৪)

আবু উবায়ইদ (রহ.) বলেন, হাদিসে মুমিনকে নরম চারাগাছের সঙ্গে তুলনা দেওয়া হয়েছে; কারণ সে প্রায়ই নিজের বা সন্তানাদির অথবা মালের মাধ্যমে বিপদে পতিত হয়। আর কাফির হলো বড় ও শক্ত গাছের মতো, যাকে বাতাসে হেলাতে পারে না। তেমনিভাবে কাফিরের জীবনে মৃত্যু পর্যন্ত তেমন কোনো বিপদ-আপদ আসে না। বিপদ হলেও কখনো এর বিনিময়ে পরকালে কোনো প্রতিদান লাভের আশা থাকে না। তার মৃত্যু হলো সেই মজবুত বিরাট বৃক্ষের মতো, যা হঠাৎ ভেঙে যায়। (ফাতহুল বারি ১০/১২২)

মোটকথা, মুমিন কখনো নানা ধরনের বিপদ-আপদ ও দুঃখ-দুর্দশা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে পারবে না। তবে বিপদ-আপদে ধৈর্য ও স্বাভাবিক অবস্থায় শুকরিয়া করার মাধ্যমে সৌভাগ্যের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে যাবে।

ফেসবুক পেজ

এরপরও আপনাদের কোর প্রকার অভিযোগ থাকলে Contact Us মেনুতে আপনার অভিযোগ জানাতে পারেন,

আমরা আপনাদের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব।

Spread the love

Check Also

কোরআনে

চেহারায় আঘাত করা কোরআনে নিষিদ্ধ

চেহারা মানবদেহের প্রধান একটি অঙ্গ। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আমি মানুষকে সুন্দরতম অবয়বে সৃষ্টি করেছি।’ (সুরা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *